ISupportShibir
Nearby non profit organizations
1000
Purana Paltan Line
Purana Paltan Line
1219
1205
1212
1000
1000
Shahbag
New Sarkhular Road
1000
Purana Paltan
Purana Paltan
Purana paltan
Contact information, map and directions, contact form, opening hours, services, ratings, photos, videos and announcements from ISupportShibir, Youth Organization, 48/1-A purana paltan, Dhaka.
ছাত্রশিবিরের ২০২০ সালের নানামুখী কার্যক্রম নিয়ে তথ্যচিত্র
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সমর্থক হতে ভিজিট করুন :
www.isupportshibir.org
৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে কেন্দ্রীয় সভাপতি সালাহউদ্দিন আইউবীর শুভেচ্ছা বক্তব্য
শাওয়াল মাসে ছয়টি নফল রোজা রাখা সুন্নত।
হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, আল্লাহ তাআলা শাওয়াল মাসের ছয় দিনে আসমান ও জমিন সৃষ্টি করেছেন। সুতরাং যে ব্যক্তি এই মাসে ছয় দিন রোজা রাখবে, আল্লাহ তাআলা তাকে প্রত্যেক সৃষ্ট জীবের সংখ্যার সমান নেকি দেবেন, সমপরিমাণ গুনাহ মুছে দেবেন এবং পরকালে তাকে উচ্চ মর্যাদা দান করবেন।
রাসুল (সা.) বলেন, যারা রমজানে রোজা পালন করবে এবং শাওয়ালে আরও ছয়টি রোজা রাখবে; তারা যেন পুরো বছরই রোজা পালন করল। (মুসলিম: ১১৬৪)
ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান ও নেজামে ইসলাম পার্টির সভাপতি, বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন, প্রবীণ রাজনীতিবিদ মাওলানা আবদুল লতিফ নেজামীর (৮৪) (রহেমাহুল্লাহ) ইন্তেকালে গভীর শোক প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।
এক যৌথ শোকবার্তায় ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মোঃ সিরাজুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল সালাহউদ্দিন আইউবী বলেন, বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন আব্দুল লতিফ নেজামীর (রহেমাহুল্লাহ) ইন্তেকালে ইসলামী আন্দোলন একজন অভিভাবক হারালো। গতকাল সোমবার ইফতারের পর তিনি বাসায় পড়ে গিয়ে আঘাত পান। তাৎক্ষণিক হাসপাতালে নেয়া হলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিঊন)। তাঁর ইন্তেকালে জাতি এক উজ্জ্বল নক্ষত্রকে হারালো। নেজামে ইসলাম পার্টিতে যোগদানের মাধ্যমে তাঁর রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়। সর্বশেষ তিনি ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান ও নেজামে ইসলাম পার্টির সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। তিনি দেশে ইসলাম ও ইসলামী আন্দোলনের প্রসার, আলেম সমাজকে ঐক্যবদ্ধকরণ ও ইসলামবিরোধী সকল কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। ইসলাম, স্বাধীনতা ও মানুষের অধিকার রক্ষায় তিনি ছিলেন অগ্রসৈনিক। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় তাঁর ভূমিকা ছিলো অত্যন্ত বলিষ্ঠ। তিনি সাদামাটা ও সহজ সরল মানুষ হিসেবে সর্বমহলে পরিচিত ছিলেন। রাজনীতির পাশাপাশি তিনি দৈনিক সরকার পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক ছিলেন। নব্বইয়ের দশকে দৈনিক শক্তি নামের একটি পত্রিকায় বার্তা সম্পাদক হিসেবে কাজ করতেন। পরবর্তীতে আরও বিভিন্ন দৈনিকে সুনামের সঙ্গে তিনি সাংবাদিকতা করেছেন। দেশ ও জনগণের জন্য তাঁর গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা আলেম সমাজ ও জাতি চিরকাল মনে রাখবে, ইনশাআল্লাহ। তিনি দুই ছেলে দুই মেয়েসহ অসংখ্য আত্মীয়স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গিয়েছেন। তাঁর ইন্তেকালে আমরা গভীরভাবে শোকাহত।
আমরা মরহুমের মাগফিরাতের জন্য আল্লাহর নিকট দোয়া করছি এবং তাঁর শোক-সন্তপ্ত পরিবার-পরিজনের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। আল্লাহ তায়ালা তাঁকে জান্নাতুল ফেরদৌসের মেহমান হিসেবে কবুল করুন।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও সাবেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এবং বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা মুহাম্মদ আবু তাহের এর প্রথম জানাজা আমীরে জামায়াত মুহতারাম ডা. শফিকুর রহমান এর ইমামতিতে রাত ১.৪৫ মিনিটের সময় মরহুমের বাসার নিচে অনুষ্ঠিত হয়। অধ্যক্ষ মাওলানা মুহাম্মদ আবু তাহের এর মৃত্যুর খবর পেয়ে রাত ১১.৪৫ মিনিটের সময় মরহুমের মগবাজারস্থ বাসায় ছুটে যান আমীরে জামায়াত ডা.শফিকুর রহমান । এ সময় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।
আল্লাহ তা'য়ালা জান্নাতের উচ্চ মাকাম দান করুন।
অধ্যক্ষ আবু তাহের ভাইঃ আমার জীবনে পাওয়া সেরা জান্নাতি উপহার
===========================================
১৯৮৫ সালে বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্র শিবিরের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে একটা বক্তৃতা শুনে থমকে দাঁড়াই। সাধারণতঃ চিৎকার করে যে সব বক্তৃতা গুলো তখন শুনতাম, তাতে আবেগ থাকতো বেশি। রক্ত উছলে উঠতো। হাত মুষ্টিবদ্ধ হতো, মুখে না’রাহ ধ্বনি উচ্চকিত হতো। এগুলোকে বলা চলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবীয় নির্ঘোষ, অথবা শায়খ আব্দুল হামিদ কিশকের উন্মাতালকরা ওয়াজ। এই দুইটার কোনটাই আমার ছোট বেলা থেকে পছন্দ নয়।
১৯৮৫ সালের ৬ ফেব্রুয়ারিতে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর এই ধরণের বক্তৃতা আমাকে শুনতেই হচ্ছিলো। অধ্যক্ষ আবু তাহরের নাম হতেই মাথায় টুপি পরা ছিপছিপে খুব সাদামাঠা একজন ভাইয়ের নাম বলা হলো। পরিচয়ে বলা হলো প্রাক্তন সেন্ট্রাল প্রেসিডেন্ট। তিনিও তার আলোচনায় ‘গতে’ থাকার কোশেশ করলেন, আলোচনায় তর্জন গর্জন করলেন, তর্জনীর ব্যবহার করলেন। কিন্তু আলোচনা সবটাই করলেন ইসলামের সম্মোহনী দলীলের ভিত্তিতে। কুরআনের আয়াত পড়লেন, ব্যাখ্যা দিলেন। হাদীসের প্রসঙ্গ আনলেন। নবী (সা) এর জীবনের সাথে আন্দোলনের রিলেট করলেন। ইরশাদ শাহীর মুন্ডপাতের চেয়ে তার ক্ষমতা দেশের অভ্যন্তর ও বাইরের জগতে বাংলাদেশের কি কি ক্ষতি নিয়ে এসেছে তার বর্ণনা দিলেন। আমি জ্ঞানের কিছু পেলাম, শেখার কিছু নিলাম, এবং অন্তরে কিসের একটা ছোঁয়া অনুভব করলাম।
আমি ছাত্র শিবিরের সাথে যুক্ত হবো কিনা এই ব্যাপারে পরামর্শ নেই আমার বড় চাচা ডঃ প্রফেসর ইয়াহইয়া আর রাহমানের কাছে। তিনি তার পরামর্শে কখনো ডিসাইসিভ কিছু বলেন না। তিনি বললেন, ইস্তেখারা করো। তবে ওদের একজন খুব ভালো নেতা আছেন। চিটাগাংএর আবু তাহের। আমি বললাম, কিভাবে জানেন? চাচাজান বললেন, আমি তখন ঢাকার তারা মসজিদের ইমাম ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। এক ভাই আমাকে বললেন, আমাদের কেন্দ্রীয় সভাপতি আবু তাহের আপনাকে দেখা করতে বলেছেন। আমি গেলাম। তিনি বললেন, ইয়াহইয়া ভাই, আমি চেষ্টা করছিলাম দুনিয়ার প্রসিদ্ধ বিশ্ববিদ্যালয় সমূহে আমাদের দেশের ছাত্রদের পাঠায়ে ভালো শিক্ষিত করে নিয়ে আসি। আমি দেশের ভালো ছাত্রদের খবর নিয়ে দেখলাম, আপনি একজন সম্ভাবনাময় ছাত্র। আপনি আপনার কাগজ পত্র গুলো নিয়ে আসুন আমি সাঊদী আরব সহ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠায়ে দেই।
চাচাজান, বলেছেন, আমি তাজ্জব হলাম। ভালো সুযোগ নিতে সাতক্ষীরার এলাকার ছাত্ররা কারো নজরে পড়বে ভাবতাম না। দেখলাম এই একমাত্র ছাত্র নেতা যার নজরে কোন মলিনতা নেই, এবং অন্তরে কোন এলাকাপূজা নেই। যদিও আমি বাইরে যাবার ব্যাপারে চিন্তা করিনি বলে তার ডাকে সাড়া দেইনি। তবু তার ব্যবহারে আমি আজো আপ্লুত। আমি এই গল্পে বুঝলাম ছাত্র শিবিরের এই একজন নেতাকে তিনি অনেক শ্রদ্ধার সাথে মনে রেখেছেন।
১৯৯১ সালে আমি রিয়াদ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তাম। ঐ বছর একটা বড় ঘুর্ণিঝড় ও জলোচ্ছাস বাংলাদেশের দক্ষিন পূর্বাঞ্চল লন্ড ভন্ড করে দেয়ে। চিটাগাং এর আনোয়ারা হয়ে যায় একদম শেষ। সেই দূর্যোগে অধ্যক্ষ আবু তাহেরের পরিবার মারত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার জন্য তিনি সাঊদির সাহায্যের ব্যাপারে উদ্গ্রীব হন। ঐ বছরেই আমার সাথে তার পরিচয় হয়, এবং আল্লাহর কসম, এই দূর্যোগে তার যে এতো বড় ক্ষতি হয়েছে, তা আমাদের বুঝাতেও দেননি। নিজের দিকে না তাকিয়ে অন্য মানুষের খিদমতে রাতদিন খেটেছেন তিনি। আমার চোখে তাকে তিনি অনেক বড় হয়ে আছেন সেই থেকেই।
১৯৯৯ সালে ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটিতে আমি শিক্ষক হিসেবে যোগ দেই। যোগ দেয়ার এক মাসের মাথায় আমার মুহাব্বাতের দাওয়াত আসে প্রিন্সিপ্যাল আবু তাহেরের অফিসে। আমি যাই। তার অফিসে দিকে আমার পা, দেখি কী এক স্বর্গীয় হাসি নিয়ে তিনি মসজিদের দোতলায় দাঁড়িয়ে আমার অপেক্ষা করছেন। আমাকে নিয়ে গেলেন অফিসে। চিটাগাঙের ঐতিহ্যবাহী বেলা বিস্কুটের সাথে দেশি চায়ের কাপ সামনে নিয়ে নিজেই হাতে ধরিয়ে দিলেন। এর পরে বসলেন আমীরের চেয়ারে। অনেক কথা হলো। আমার সংসারের গভীরে গেলেন, আমার ওয়াইফের মা মরার ঘটনা জানতে চাইলেন, আমাদের ইনকামের সোর্স জানতে চাইলেন। পি এইচডি কবে করবো, কিভাবে করবো তার প্লান জানতে চাইলেন। তার নাকি ধর্মীয় ও ইলমি ব্যাপারে আমা্কে সাহায্য করতে হবে জানালেন। তাই তার পাশে দাঁড়ায়ে তাকে কোন কোন ক্ষেত্রে আমি সাহায্য করতে পারবো তার ব্যাপারে জানতে চাইলেন। আমাকে বিদায় দেয়ার সময় রিক্সা ভাড়া এগিয়ে দিলেন। আমি এক অনাস্বাদিতপূর্ব ইসলামি নেতার পরিচয় পেলাম। জামাআতে ইসলামির মধ্যে এমন বিনয়ী, সহজ সরল ও ইলম পাগল মানুষ থাকে দেখে অভিভূত হলাম।
বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনি বিভিন্ন পর্যায়ে দ্বায়িত্বশীল ছিলেন। ফলে নানান দিকে তার সাথে মিশে গেলাম। ভাবী ফাজিলা তাহেরের সাথে আমার স্ত্রীর সুন্দর সম্পর্কে আরো কাছে এলাম। তার ছেলে মেয়েদের শিক্ষক হওয়ায় সম্পর্কটা মুরুব্বিয়ানায় যেয়ে পৌঁছায়। নানা ব্যপারে তার সাথে দেখা হওয়া জরুরি হয়ে যেতে লাগলো। এবং আমি মনে করা করা শুরু করলাম, চিটাগাংএ আমার যারা আত্মার আত্মীয়, তিনি তাদের মধ্যে অন্যতম। ছেলে ফারুক কোথায় যেতো তার হিসেব দিতে হত। কিন্তু আমার বাসায় ঘন্টার পর ঘন্টা কাটালেও তিনি খুশি হতেন।
একবার পারিবারিক এই জটিলতায় কি সিদ্ধান্ত নিবেন তার জন্য আমাকে ও আমার বন্ধু শায়খ আব্দুর রহমান মাদানীকে তিনি দাওয়াত দিলেন বাসায়। জামাআতে ইসলামির নেতাদের বাসায় যাওয়ার অভিজ্ঞতা আমার নেই বললেই চলে। তিনিই হলেন দ্বিতীয় নেতা যার বাসায় আমি দাওয়াত খেতে যাই। আমরা দুইজন গেলাম। ভেতরে ঢুকলাম। যেখানে বসলাম, সে সব আসবাব পত্র দেখলাম- তা দেখে আমার অন্তর হু হু করে উঠলো। একি দৈন্য দশা?! আমি তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। ভাড়া করা ফ্লাটে থাকি। সোফাটা চিটগাংএর সেরা সেগুনকাঠের। বইএর আলমিরা অনেক দামের সেগুনের জ্বলজ্বলে পলিশ। কিন্তু উনার বাসায় যা দেখলাম তা অসলেই ইসলামের ইতিহাসের প্রথম দিককার সালফে সালেহীনের জীবনে থাকতো বলে পড়েছি। আমি খাওয়া দাওয়া করলাম। ভাবীর হাতের রান্নায় যৌগিকতা ছিলো। চিটাগাং ও ঢাকাইয়া রান্নার কম্বিনেশান ছিলো। এরপর যে সমস্যাটার কথা শুনলাম তা শুনে হাসি এলো। তিনি ফারজানার লেখাপড়া নিয়ে চিন্তা করছেন। ভাবী চান ছেলে মেয়েগুলোকে দীনের দাঈ ইলাল্লাহ বানাবেন। ভাই চান ছেলে মেয়েদের প্রতিভা ও মেধার সাথে তাদের ইচ্ছার স্বাধীনতা দেবেন। সব শুনে আমি ভাবীর পক্ষে মত দিলাম, মাদানী সাহেব ভায়ের কথাটাকে প্রাধান্য দিলেন। আমরা চলে এলাম। এবং তার বিনয়, সারল্য ও দীনী মেজাজ দেখে মন ভরে দুয়া করে এলাম।
চিটাগাংএ জামাআতে ইসলামের একটা বড় অনন্যতা আমার চোখে পড়েছে। তা হলো সেখানে উলামায়ে কিরামের সাথে জামাআতের উলামায়ে কিরামের সদ্ভাব। এটা আমি আর কোথাও দেখিনি। আমরা আই আই ইউ সির শিক্ষক। এটা জেনেও আমাদের পটিয়াতে আমন্ত্রণ জানানো হতো। হাটহাজারীতে যাইতে চাইলে শায়খ আহমাদ শফী হাফিযাহুল্লাহ আমাদের বুকে টেনে নিতেন। দারুল মাআরিফের শায়খ সুলতান যাওকের নয়নমনি ছিলাম আমরা। লালখান মাদ্রাসাকে আমরা নিজেদেরই মনে করতাম। তারাও আমাদের প্রিয়তা দিতেন। আর বায়তুশ শরফের পীরের দরবার ছিলো আমাদের নিত্যদিনের পছন্দের যায়গা। এই সবের পেছনে ছিলো মাওলানা আবু তাহের সাহেবের উদার বুকের বিস্তীর্ণ জমিন।
ক’বছর আগে আস্ট্রেলিয়ায় যাই এক প্রোগ্রামে গেস্ট হয়ে। আমার হোস্টগণকে বললাম, আমার সারা প্রোগ্রাম আপনাদের ইচ্ছে মত সাজান, তবে ডঃ ফারুক আমীনের সাথে আমার একটা রাত কাটাবার ব্যবস্থা করবেন। ফারুকের বাসা থেকে কথা হলো মারাত্মক অসুস্থ অধ্যক্ষ আবু তাহের ভায়ের সাথে। তিনি আমার অনেক কথা জানতে চাইলেন। ইসলামি শিক্ষার জন্য কিছু করছি কিনা তারও খোঁজ নিলেন। আই আই ইউ সিতে আবার ফিরবো কিনা তার জন্য সকাতর আবেদন জানালেন। এবং বললেন, ফারুকের ঐখানে যখন গেছেন, ফারজানাকেও দেখে দুয়া দিয়ে আসবেন। আমিও তার নির্দেশ পালন করে আসি।
অনেকদিন তাহের ভাইএর সাথে কথা হয়নি। তবে তিনি খুব অসুস্থ তার খবর পেতাম ফারুকের মাধ্যমে। তার জন্য ভাবীর অনবদ্য কুরবানীর আমাদের জন্য ইতিহাস হয়ে থাকবে।
আজ তিনি আল্লাহর কাছে হাজিরা দিয়েছেন। বাংলাদেশের এমন কোন উপজেলা নেই, ইসলামের সেবায় তার পা যেখানে পড়েনি। আল্লাহর কাছে দুয়া করি বাংলাদেশের ইসলামি রাজনীতিতে ক্ষণজন্মা এই শায়খ কে আল্লাহ যেন ক্ষমা করেন। দীর্ঘ দিনের রোগ ভোগের কারণে আল্লাহ তার গুনাহ মাফ করে দিন ও মর্যদা বৃদ্ধি করে দিন। তার শোক সন্তপ্ত পরিবারকে শোক কাটিয়ে ওঠার তাওফীক্ব দিন। ভাবীকে কি বলবো, তিনি আমাদের রৌলমডেল। তিনি হবেন ধৈর্যের পারাকাষ্ঠা এই দুয়া করি। আমার নয়নজোড়া ডঃ ফারুক ও ডঃ ফারজানাকে আল্লাহ সবর দিন।
Dr M Abdus Salam Azadi
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও সাবেক সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল অধ্যক্ষ মাওলানা মুহাম্মদ আবু তাহের ভাই দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর আজ (৯ মে) রাত সাড়ে ১০টায় ইন্তেকাল করেছেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিঊন।
আল্লাহ তায়ালা আমাদের শ্রদ্ধাভাজন প্রিয় দায়িত্বশীলকে জান্নাতুল ফেরদৌসের মেহমান হিসেবে কবুল করুন।
শিক্ষার্থীসহ বিপদগ্রস্তদের মেস ও বাসাভাড়া মওকুফের দাবী জানিয়ে ছাত্রশিবিরের বিবৃতি
করোনা পরিস্থিতির কারণে শিক্ষার্থীসহ বিপদগ্রস্তদের বাসা ভাড়া মওকুফের দাবী জানিয়ে বিবৃতি প্রদান করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।
এক যৌথ বিবৃতিতে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মোঃ সিরাজুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল সালাহউদ্দিন আইউবী বলেন, করোনার সংক্রমন কমাতে সরকারের নির্দেশনায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ব্যবসা-বানিজ্য, স্বাভাবিক চলাফেরা প্রায় বন্ধ। থেমে আছে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। ব্যবসা-কর্মক্ষেত্র বন্ধ থাকায় জনগণের বিশাল একটি অংশ ইতোমধ্যে ভয়াবহ আর্থিক ও খাদ্য সংকটে পড়েছে। যার দু:খজনক দৃশ্য প্রতিদিনই জাতি গণমাধ্যমের কল্যাণে দেখতে পাচ্ছে। এই অবস্থায় ভয়াবহ বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছে দেশের লাখো ছাত্র-ছাত্রী। এদের অধিকাংশই আবাসিক হলে কিংবা মেসে থাকে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ার সাথে সাথে শিক্ষার্থীদের আর্থিক উৎসগুলোও বন্ধ হয়ে গেছে। টিউশনি আর পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষমের টাকায় যাদের পড়াশুনা, মেস ভাড়া ও আনুসঙ্গিক খরচ চলত এমন মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারের শিক্ষার্থীরা পড়েছে চরম বিপাকে। ফলে অসংখ্য শিক্ষার্থীর শুধু পড়াশুনারই ক্ষতি হচ্ছে না বরং তারা মানবেতর জীবন যাপন করছে। বহু শিক্ষার্থী অর্ধাহারে অনাহারে জীবন যাপন করছে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের মানবেতর জীবন যাপনের ব্যাপারে খুব একটা দৃষ্টি দেওয়া হয়নি। যা অত্যন্ত দু:খজনক। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন স্থানে সেমিস্টার ফি ও বাসা ভাড়ার জন্য শিক্ষার্থীদের চাপ দেওয়া হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের দুরবস্থা বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসনের অজানা থাকার কথা নয়। এ অবস্থায় শিক্ষার্থীদের সেমিস্টার ফি ও বাসা ভাড়া প্রদান করা দুরূহ। উল্টো তাদের অনেকের সার্বিক সহায়তা প্রয়োজন। অবিলম্বে বিপদগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের সহায়তায় বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমরা সরকারের প্রতি জোড় দাবী জানাচ্ছি। অন্যদিকে সাধারণ কর্মজীবী মানুষের অবস্থাও করুন। ঢাকা, চট্টগ্রামের মত নগরীগুলোতে এ চিত্র ভয়াবহ রুপ ধারণ করেছে। ঢাকায় বসবাসরত বেশীর ভাগ মানুষই ভাড়াটিয়া। যাদের জীবনযাত্রা কর্মের উপর নির্ভরশীল। হঠাৎ করে কর্মস্থল, ব্যবসা-বানিজ্য বন্ধ হয়ে যাওয়ায় স্বল্প আয় ও খেটে খাওয়া মানুষেরা ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছে। একপ্রকার নিরব দুর্ভিক্ষ চলছে কর্মজীবী মানুষের পরিবারগুলোতে। তার ওপর অনেকের রয়েছে কিস্তির দেনা শোধের চাপ। এরই মধ্যে অনেক ভাড়াটিয়াকে ভাড়ার জন্য হেনস্তা করা হচ্ছে, বাসা থেকে বের করে দেয়া হচ্ছে। যেখানে এসব মানুষ ঠিকমত খাবারই জোগাড় করতে পারছেনা সেখানে এ মুহুর্তে তাদের পক্ষে বাসাভাড়া, দোকানভাড়া বা কিস্তি প্রদানের জন্য চাপ দেয়া, মরার উপর খারার ঘা' এর মত বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের বিকল্প পথও খোলা নেই। এ অবস্থায় বাস্তবিক ও মানবিক দিক বিবেচনা করে শিক্ষার্থীদের সেমিস্টার ফি, মেস-আবাসিক হোস্টেলের সিট ভাড়া মওকুফ করা জরুরী। অন্যদিকে অমানবিক পরিস্থিতিতে থাকা বিপদগ্রস্ত মানুষের প্রতি মানবিক আচরণ সময়ের দাবী। সুতরাং সার্বিক বিবেচনায় বিপদে থাকা মানুষদের বাসা-দোকান ভাড়া এবং এনজিও, ক্ষুদ্র ঋণের কিস্তি আংশিক বা পূর্ণ মওকুফের ব্যাপারে সদয় হওয়ার জন্য আমরা সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি জোড় অনুরোধ করছি।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, সরকারের জরুরী ফান্ড থেকে শিক্ষার্থী ও বিপদগ্রস্ত মানুষের দূর্দশায় সহায়তা করলে সহজেই এ সংকট থেকে উত্তরণ সম্ভব। এজন্য প্রয়োজন সরকারের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ। একই সাথে প্রয়োজন বাসা, দোকান ও মেস মালিকদের মানবিকতা এবং দায়িত্ববোধ। আমরা আশা করি শিক্ষার্থী ও বিপদগ্রস্ত মানুষকে সার্বিক সহায়তা ও কষ্ট লাঘবে সরকার এবং সংশ্লিষ্ট সবাই যার যার অবস্থান থেকে মানবিকতা ও দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিবেন।
বালাকোট থেকে বাংলাদেশ একটি ঐতিহাসিক পর্যালোচনা
ঊনবিংশ শতকের গোড়ার দিকে বাংলাসহ সমগ্র ভারতবর্ষব্যাপী এক সুসংগঠিত স্বাধীনতা আন্দোলন ভারতীয় মুসলমানদের দ্বারা পরিচালিত হয়েছিল। এ আন্দোলনের প্রাণপুরুষ ছিলেন সাইয়েদ আহমদ শহীদ। আন্দোলনের উদ্দেশ্য ছিল বাংলা ভারতে একটি অখণ্ড ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। সুনিপুণ কর্মসূচি ও ঈমানী চেতনায় উদ্ভাসিত হয়ে এ আন্দোলনের কর্মসূচি পরিচালিত হলেও কতিপয় লোকের চরম বিশ্বাসঘাতকতার কারণে তা চূড়ান্ত লক্ষ্যে উপনীত হতে পারেনি।
ব্রিটিশ নিয়ন্ত্রিত অবিভক্ত ভারতে শাহ ওয়ালিউল্লাহ মোহাদ্দেস দেহলভীর চিন্তা চেতনায় যে ইসলামী রেনেসাঁর সৃষ্টি হয়েছিল, তার ঐতিহাসিক স্মৃতি চিহ্নসমূহের মধ্যে বালাকোটের ঘটনা অনন্য গুরুত্বের দাবিদার। ভারতবর্ষের স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম বীর সেনানী সাইয়েদ আহমদ শহীদ (রায় বেরলভী) (১৭৮৬-১৮৩১), শিখ ও ইংরেজদের অধীনতাপাশ কাটিয়ে এবং তাদের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে স্বাধীন সার্বভৌম ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। তিনি সাইয়েদ আহমদ বেরলভী নামেও সমধিক পরিচিত। তরিকতে মুহাম্মদী আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে তিনি মুসলমানদের কাছে আমিরুল মোমেনীন হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তৎকালীন ভারতের উত্তর-পশ্চিম সীমান্তের অন্ধ্র প্রদেশ থেকে শুরু করে মর্দান পর্যন্ত এ বিশাল অঞ্চলে তিনি ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে ইসলামী শাসনব্যবস্থা চালু করেন। মাওলানা সাইয়েদ মাজহার আলীকে প্রধান বিচারপতি, সুলতান মুহাম্মদকে গভর্নর জেনারেল, শাহ ইসমাইল মুহাদ্দিস দেহলভীকে প্রধান সেনাপতি নির্বাচিত করে তার এ ইসলামী রাষ্ট্রের কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
চরম মুসলিমবিদ্বেষী শিখ ও ইংরেজ সরকার মুসলমানদের এ প্রচেষ্টায় ভীত হয়। তারা ছলেবলে কলা-কৌশলে উদীয়মান নবগঠিত এ মুসলিম প্রজাতন্ত্রকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। আর এ জন্য মোটা অঙ্কের অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে সীমান্তবর্তী কিছু বিশ্বাসঘাতকের সহায়তায় ১৮৩১ সালের ৬ মে ঐতিহাসিক বালাকোটের ময়দানে ইংরেজ সমর্থনপুষ্ট শিখদের বিশাল বাহিনী তাদের ষড়যন্ত্র সফল করে। ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার এপ্রচেষ্টা সাময়িকভাবে বাধাপ্রাপ্ত হলেও এ ঘটনাটি ইতিহাসে সুদূরপ্রসারী প্রভাব রেখে যেতে সমর্থ হয়েছে।
সাইয়েদ আহমদ শহীদ (রহ) ১২০১ হিজরির ৬ সফর মতান্তর ১৭৮৬ সালে এলাহাবাদের রায়বেরলভীতে জন্মগ্রহণ করেন। তার বয়স যখন ১৭-১৮ বছর তখন পিতা আলমুল্লাহ ইন্তেকাল করেন। ১৮০৪ সালের দিকে বিদ্যার্জনের জন্য তিনি দিল্লিতে শাহ আব্দুল আজিজ মোহাদ্দেস দেহলভীর নিকট গমন করেন। ১৮১৮ সালের দিকে তিনি পুনরায় দিল্লিতে আসেন। জীবনের এ সময়ে তিনি প্রায় ২ বছরকাল রোহিলাখণ্ড, আগ্রা, অযোধ্যার মিরাট, মুজাফ্ফার নগর, মুরাদাবাদ, রামপুর, সাহারানপুর, লক্ষ্ণৌ, কানপুর ও বেনারসে অনেক মাহফিলে ধর্মীয় সংস্কার ও ইসলামী আন্দোলন সম্পর্কে বক্তব্য রাখেন। তিনি আধ্যাত্মিক শিক্ষায় এত বেশি যোগ্যতা অর্জন করেছিলেন যে, তৎকালীন বিখ্যাত উলামাগণ তার হাতে বাইয়াত গ্রহণ করেছিলেন। উল্লেখযোগ্যদের মধ্যে মাওলানা ইমামুদ্দিন বাঙালি, মাওলানা মুহাম্মদ ইউসুফ, মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুল হাই, মাওলানা বেলায়াত আলী, মাওলানা ইয়াহইয়া আলী, বিপ্লবী আহমাদউল্লাহ এবং সুফী নূর মোহাম্মদ নিজামপুরীর মত ব্যক্তিরা তার আধ্যাত্মিক ও জিহাদী কর্মের সমর্থক ও অনুসারী ছিলেন।
তার আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্য ছিল মুসলমানদের শিরক ও বিদআত মুক্ত করা, তৌহিদের মর্মবাণীর দিকে ফিরিয়ে নেয়া এবং ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তার পরিপূর্ণতা সাধন করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা। সুফি তরিকা বা আধ্যাত্মিকতার প্রভাব তার আন্দোলনে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছিল।
১৮২১ সালের দিকে প্রায় ৪০০ ভক্তসহকারে তিনি হজ পালনের জন্য মক্কায় গমন করেন। হজ থেকে ফিরে এসে তিনি দু’ভাবে তার সংস্কার আন্দোলন শুরু করেন।
প্রথমত, সমাজ থেকে সকল কুসংস্কার ও যাবতীয় জুলুম নির্যাতন এবং অনৈসলামিক কার্যকলাপ দূর করে মুসলমানদের নৈতিক ও আধ্যাত্মিক জীবন উন্নত করা।
দ্বিতীয়ত, ইংরেজ বেনিয়াদের ভারতবর্ষ থেকে বিতাড়িত করে ইসলামী হুকুমাত প্রতিষ্ঠা করা।
সাইয়েদ আহমদ শহীদ (রহ) ভারতের প্রধান প্রধান শহরে তার প্রতিনিধি বা খলিফা নিযুক্ত করেন। পাটনাকে কেন্দ্র করে এ আন্দোলনের কার্যক্রম পরিচালিত হয়। ভারতের সর্বত্র জিহাদের প্রচারণা ও প্রস্তুতি শেষে তিনি জন্মভূমি রায়বেরলভী ত্যাগ করে কান্দাহার হয়ে নওশেরায় পৌঁছেন। মুসলমানদের ওপর নির্যাতনকারী শিখদের ইসলাম গ্রহণ নতুবা বশ্যতা স্বীকার বা যুদ্ধের আমন্ত্রণ জানান। শিখরা যুদ্ধ করতে সম্মত হয়। মুসলমানরা এ যুদ্ধে জয়লাভ করে। ১৮২৪ সালের দিকে শিখদের আক্রমণে যখন মুসলমানদের অবস্থা অত্যন্ত করুণ তখন তিনি ১৮২৬ সালের ১৭ জানুয়ারি হিজরতের জন্য রায়বেরলভী থেকে কাপলী, গোয়ালিয়র, ঠংকু, আজমীর, পালী, অসরকোট, হায়দরাবাদ, পীরকোট, মাজদাহী, শিকারপুর, বুলান, কোয়েটা, কান্দাহার, গজনী, কাবুল এবং জালালাবাদ হয়ে পেশোয়ারে পৌঁছান। পথিমধ্যে সাধারণ মুসলমানরা ছাড়াও তিনি ভাওয়ালপুর, বেলুচিস্তান, কান্দাহার ও কাবুলের শাসকদের জেহাদের জন্য আহ্বান জানান। পেশোয়ারবাসীরা শিখদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক অভিযান শুুুরু করার জন্য তাকে অনুরোধ করে। স্থানীয় প্রায় লক্ষাধিক লোক তার বাহিনীতে যোগ দেয়। কিন্তু সীমান্তের সর্দাররা ছিল অর্থলোভী ও চরম স্বার্থপর। অর্থের প্রলোভনে উপজাতীয় মুসলিমরা শিখদের পক্ষাবলম্বন করলে মুসলিম মুজাহিদ বাহিনী বিপর্যস্ত হয়। প্রায় ৭০০ জন মুজাহিদ নিয়ে ১০,০০০ মতান্তরে ২০,০০০ শিখ বাহিনীর মোকাবেলা করেছিল মুসলিমরা।
বালাকোটের যুদ্ধে শহীদ মুজাহিদদের সংখ্যা প্রায় ৩০০। তাদের মধ্যে বাংলাদেশের ৯ জন শীর্ষস্থানীয় মুজাহিদও ছিলেন। মাওলানা ইমামুদ্দিন বাঙালিসহ প্রায় ৪০ জন বাংলাদেশী মুজাহিদ আহত হয়েছিলেন যাদের সকলে স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করেছিলেন। অন্যদিকে প্রায় ১০০০ শিখ নিহত হয়েছিল। শিখরা যুদ্ধশেষে বালাকোটের ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে সেখানে তাদের নিহত শিখ সৈন্যদের দাহ করে। শিখদের অগ্নিসংযোগে মুসলমানদের ব্যাপক আর্থিক ক্ষতিও সাধিত হয়। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয় সাইয়েদ আহমাদ শহীদ ও ইসমাঈল শহীদের (রহ) প্রায় সকল রচনাবলি ভস্মীভূত হয়।
উপমহাদেশের অন্য সকল স্থানের চেয়ে বালাকোট স্থানটি এ কারণে সর্বাধিক গুরুত্বের অধিকারী হয়ে রয়েছে যে, স্বাধীনতা আন্দোলন তথা ইসলামী আদর্শ ও শিক্ষার পুনঃ প্রতিষ্ঠা আন্দোলনের ইতিহাসে তা বিশেষ মর্যাদার আসন লাভ করেছে।
বালাকোটের শিক্ষা
৩৪০ ৩৩” উত্তর দ্রাঘিমাংশ এবং ৭৩০২১” পূর্ব অক্ষাংশের খাইবার-পাখতুনখায় অবস্থিত মেনশেহরা শহরের ৩৮ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে অবস্থিত একটি শহরের নাম বালাকোট। এটি একটি ঐতিহাসিক স্থান এবং খাইবার-পাখতুনখায়ার কাগান উপত্যকার প্রবেশদ্বারও বটে। লুলুসার হ্রদ থেকে উৎপন্ন কুনহার নদীটি এ শহরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে পাকিস্তান শাসিত কাশ্মিরের মুজাফ্ফারাবাদের ঝিলাম নদীতে গিয়ে মিশেছে। মূল যুদ্ধ ক্ষেত্রটি বালাকোট শহর বা জনপদ থেকে সাতবানে ঝরনার পশ্চিম প্রান্ত পর্যন্ত, যেখান থেকে মেট্টিকোট ঝরণা ও মেট্টিকোট টিলার পাদদেশ পর্যন্ত বিস্তৃত।
আলোচ্য লেখার শিরোনাম ‘বালাকোট থেকে বাংলাদেশ’ দেখে অনেকে আশ্চর্যান্বিত হতে পারেন। তবে মূল শব্দ দুটোর মাঝে যে একটা বিশেষ মিল রয়েছে তা অস্বীকার করার কোন জো নেই। চেতনা আর লক্ষ্য উদ্দেশ্যের দিক থেকে বালাকোটের মুসলমানরা যে বিরোধিতার সম্মুখীন হয়েছিল, বাংলাদেশ তথা সমগ্র বিশ্বের মুসলমানরা আজো ইসলামবিরোধী শাসক ও মুসলিমবিদ্বেষী অমুসলিমদের নিকট থেকে তেমনি বাধা বিপত্তির সম্মুখীন হচ্ছে। আজ মুসলমানরা কাশ্মীরে ভারতের ব্রাহ্মণ্যবাদী হিন্দুদের, ইরাক ও আফগানে ইঙ্গ-মার্কিন খ্রিষ্টানদের, ফিলিস্তিনে জায়নবাদী ইহুদিদের, চীনের জিনজিয়াং প্রদেশে সমাজতন্ত্রী বৌদ্ধদের আক্রমণের শিকার। মুসলিম দেশগুলোতে সাম্রাজ্যবাদী শক্তির দোসরদের অব্যাহত ষড়যন্ত্র ইসলাম ও মুসলিমদের জীবনযাত্রা ব্যাহত করছে প্রতিনিয়ত। বালাকোটের ময়দানে মুসলমানরা পরাজিত হওয়ার আগে যে রকম পরিকল্পিত আন্দোলন ও ঈমানী চেতনায় আন্দোলিত হয়েছিল আজ বিশ্বব্যাপী তেমন পরিলক্ষিত হচ্ছে না।
ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসে মুসলমানদের বিশেষ করে আলেমদের প্রচেষ্টা প্রণিধানযোগ্য। ১৮৫৭ সালের সিপাহি বিদ্রোহে ব্রিটিশবিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনে মুসলমানদের যে অসীম সাহসিকতা প্রদর্শিত হয়, তা বালাকোট আন্দোলনেরই অংশ। ১৯৪৭ সালে মুসলমানদের জন্য আলাদা মুসলিম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার যে চেষ্টা তথা পাকিস্তান এবং তারই পথ ধরে পরবর্তীতে বাংলাদেশ সৃষ্টি, তার সবটাই বালাকোটের সুদূরপ্রসারী শিক্ষা। মুসলমানদের জন্য আলাদা আবাসভূমি প্রতিষ্ঠার পশ্চাতে বালাকোটের আন্দোলনই ছিল সূচনাপর্ব। ঊনবিংশ শতকে এদেশে স্বাধীন মুসলিম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে ইংরেজ বেনিয়াদের এদেশ থেকে বিতাড়িত করার চেষ্টা মুসলমানরাই প্রথম শুরু করেছিল। আর সে জন্যই ইংরেজদের আক্রোশ ও আক্রমণের শিকার হয়েছিল মুসলমানরা। মুসলমানদের শাসন ক্ষমতা, জমিদারি ও ওয়াকফ সম্পত্তি বাতিল করে চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের মাধ্যমে অমুসলিমদের ক্ষমতায়ন আর ফারসি ভাষার পরিবর্তে ইংরেজিকে রাষ্ট্র ভাষা করে মুসলিমদের চাকরিচ্যুত করার যাবতীয় কার্যাদি সম্পন্ন করা হয়।
বালাকোটের ইসলামী আন্দোলন ভারতীয় উপমহাদেশের সকল সংগ্রামের জন্য অনুকরণীয় হলেও এর সাময়িক ব্যর্থতার পেছনে ইসলামবিরোধী শক্তির ঐক্যের গভীর মিল রয়েছে। আজকের মুসলিম বিশ্বে ইসলামী রেনেসাঁ ও ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার প্রধান শত্র“ হচ্ছে স্বজাতীয় একশ্রেণীর স্বার্থপর, বিশ্বাসঘাতক বা বিভ্রান্ত গাদ্দার। তারা ইসলামী আন্দোলনের পদে পদে যে অন্তরায় সৃষ্টি করছে, বাইরের শত্র“রা তা আদৌ করতে পারে না।
অমুসলিম বা বাইরের শত্রুরা তাদের হীনস্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য ইসলামের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করে থাকে সাধারণত এসব মুসলিম নামধারী বিশ্বাসঘাতকের কাঁধে ভর করে। সাইয়েদ আহমদ শহীদ (রহ)ও তার ইসলামী আন্দোলনে স্বজাতীয় শত্র“দের দ্বারাই বিপর্যস্ত হয়েছিলেন। ১৮৩১ সালের পর ১৭৯ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। সে সময়কার শিখ ও ইংরেজ আশীর্বাদপুষ্ট জমিদার শ্রেণীর নির্যাতনের মতই আজকের মুসলিম উম্মাহর অবস্থা আরো বেশি সঙ্কটাপন্ন। বিশ্বব্যাপী মুসলিম মিল্লাতের এ করুণ দশা থেকে মুক্তি পেতে আমরা সাইয়েদ আহমদ শহীদ (রহ) এর শিক্ষাকে কাজে লাগাতে পারি।
সাইয়েদ আহমদ শহীদ (রহ) ইচ্ছা করলে মসজিদ, মাদ্রাসা ও খানকার মধ্যে ইসলাম প্রচারে কাজ সীমাবদ্ধ রাখতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা না করে মহানবী (সা) এর জীবনাদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে গরিব-দুঃখীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন, নির্যাতিত নিপীড়িত মুসলমানদের সাহায্য করেছেন। এমনকি ঈমান আকিদা রক্ষার্থে হিজরত পর্যন্ত করেছেন। চূড়ান্ত পর্যায়ে জানমালের মায়া ত্যাগ করে ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর চরম দুশমন আল্লাহদ্রোহীদের বিরুদ্ধে বালাকোটের ময়দানে লড়াই করে শাহাদাত বরণ করেছেন। বর্তমান মুসলিম মিল্লাতের দুর্দিনে যারা ইসলামের অনুসারী হিসেবে নিজেদের পরিচয় দিতে চান, যারা ইসলামী জ্ঞানের ধারক ও বাহক আলেম সম্প্রদায়, নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ সর্বোপরি যারা নিজেদের মুসলিম বলে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করেন তাদের জন্য প্রয়োজন হচ্ছে বালাকোটের সাইয়েদ আহমদ শহীদ (রহ) এর জীবন থেকে প্রকৃত ইসলামের আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে শিক্ষা গ্রহণ করা। তবেই মুসলিম জাতির শ্রেষ্ঠত্ব বিশ্বের বুকে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে ইনশাআল্লাহ। সাইয়েদ আহমদ শহীদ (রহ) এর আলোকিত জীবন হোক প্রাচুর্যের মিথ্যা মরীচিকায় ধোঁকা খাওয়া মুসলিম নেতৃবৃন্দ ও অনুসারীদের জেগে ওঠার দুর্বার প্রেরণা।
আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ।
করোনাভাইরাসের কারণে সকলের জন্য সম্পূর্ণ বিনামূল্যে অনলাইনে করোনাবিষয়ক প্রয়োজনীয় পরামর্শ সেবা প্রদান করা হচ্ছে। পরামর্শ পেতে নিম্নোক্ত ছবিতে দেওয়া নম্বরসমূহে যোগাযোগ করতে পারেন।
বি.দ্র.: আমাদের দেশের অনেকেই ফেসবুক ব্যবহার করেন না। কিন্তু সহযোগিতা প্রয়োজন হতে পারে যে কারোরই। তাই, এই পোস্টটি নিজ ফেসবুক ওয়ালে শেয়ার করার পাশাপাশি এর কথা আপনার আত্মীয়-প্রতিবেশী ও পরিচিতজনদের জানালে তারা হয়ত উপকৃত হতে পারবেন ইনশাআল্লাহ। এ ব্যাপারে সবিনয়ে সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।
ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী হামলায় আহত সাবেক রাবি শিবির নেতা আবু রায়হানের ইন্তেকালে শিবিরের শোক
২০০৯ সালে ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের হামলায় নিহত ছাত্রশিবির রাবি শাখার তৎকালিন সেক্রেটারি শহীদ শরিফুজ্জামান নোমানীর সাথে গুলিবিদ্ধ জীবন্ত শহীদ আবু রায়হানের ইন্তেকালে গভীর শোক প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।
এক যৌথ শোকবার্তায় ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মোঃ সিরাজুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল সালাহউদ্দিন আইউবী বলেন, ২০০৯ সালের ১৩ মার্চ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের হামলায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সেক্রেটারি শহীদ শরিফুজ্জামান নোমানীর শাহাদাতের দিন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের মেধাবী ছাত্র আবু রায়হানকে রাবি ছাত্রলীগ জোরপূর্বক শেরে-ই-বাংলা হলের গেইট থেকে তুলে নিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় বর্বর নির্যাতন চালিয়ে বাম পায়ে গুলি করে এবং হলের ছাঁদ থেকে ফেলে দেয়। তিনি মারাত্মকভাবে আহত হন তাঁর বাম পা ও ডান হাত ভেঙ্গে যায়। এরপর থেকেই দূরারোগ্য কিডনি বিকল রোগে আক্রান্ত ছিলেন তিনি। আজ সকাল ৮টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিঊন)। তাঁর ইন্তেকালে ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা আজ শোকাহত। বাতিলের মোকাবেলায় সুদৃঢ় প্রাচীরের ভূমিকা পালনে তিনি ছিলেন জীবন্ত নজির। একইসাথে তিনি ছিলেন জীবন্ত শহীদ। আহত হওয়ার পর রোগাক্রান্ত হয়ে দীর্ঘ সময় কষ্ট করেছেন। কিন্তু তাঁর ঈমানি জজবায় ভাটা পড়েনি বরং আরো শানিত হয়েছে, আলহামদুলিল্লাহ। তিনি তাঁর সহযোদ্ধা আরেক শহীদ আহসান হাবিবের স্মরণে হৃদয়গ্রাহী প্রেরণাদায়ক প্রবন্ধ লিখেছিলেন; যা ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে আছে। অন্যদিকে তিনি নিজেও শাহাদাৎ প্রত্যাশী ছিলেন। যা তাঁর লেখনী ও বাস্তব জীবনে ফুটে উঠেছিল। সাংগঠনিক জীবনে তিনি উপশাখা থেকে শুরু করে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ইন্তেকালের সময় এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন। তাঁর ইন্তেকালে দেশের ইসলামী আন্দোলন একজন নিবেদিত প্রাণ, সাহসী, দক্ষ ও সম্ভাবনাময় নেতৃত্বকেই বিদায় দিল। ছাত্রশিবির তাঁকে কখনো ভুলে যাবে না। বাতিলের মোকাবেলায় ইসলামী আন্দোলনকে এগিয়ে নিতে তাঁর প্রচেষ্টা আমাদের জনশক্তিদের জন্য অনুকরণীয় হয়ে থাকবে, ইনশাআল্লাহ।
আমরা মহান আল্লাহ তায়ালার নিকট তার শাহাদাতের কবুলিয়াতের জন্য দোয়া করছি এবং তাঁর শোক সন্তপ্ত পরিবার-পরিজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।
সেই ছোটবেলা থেকেই ক্যাসেটের টেপে যে মানুষটার কণ্ঠ শুনলেই মানুষকে পিনপতন নিরবতায়, নিশ্চুপ বসে তাফসীর শুনতে দেখতাম তিনি আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী। এই কণ্ঠে যে তাফসীর তিনি শোনাতেন, মানুষ তা শুনে ঈমান শক্ত করতে পারতেন, আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহর একত্ববাদের কথাই তাঁর বক্তৃতায় ফুটে উঠতো। এক আল্লাহর মহানত্বের ধ্বনি তিনি উচ্চারণ করতেন। উচ্চ শিক্ষিত, কম শিক্ষিত, সাক্ষর, নিরক্ষর সকলের জন্য তাঁর কথা বুঝতে পারা ছিল সহজ। আশ্চর্যের বিষয় হলো, একই বক্তৃতা, একই উদাহরণ সব শ্রেণির মানুষই সমানতালে পছন্দ করতেন, উপভোগ করতেন। সাধারণত এক ঘন্টার ওয়াজের মধ্যে কত সুদীর্ঘ আলোচনাই যেন তিনি করতেন!
তাঁকে আটকে রেখে আজকের এই সময়ে মানুষকে সেই অসাধারণ তাফসীর শোনা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে কতটা বছর। ইসলামপ্রিয় জনতার হৃদয়ের স্পন্দন আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে এদেশের আপামর জনতা ভালোবাসে, যেমনভাবে আমি তাঁকে ভালোবাসি আল্লাহর জন্য। বিভেদের দেয়াল যে আমাদের অন্তরের বন্ধনের মাঝে একটুও ছেদ ঘটাতে পারেনি, ওরা যদি তা বুঝতো!
লাখো জনতার ন্যায় তাই আমিও সাঈদী হুজুরের মুক্তির দাবি জানাচ্ছি।
আল্লাহর কাছে দোয়া করছি, আল্লাহ তায়ালা যেন আমাদের প্রিয় মুফাসসির আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী হুজুরকে সুস্থ অবস্থায়, সম্মানের সাথে দ্রুত আমাদের মাঝে মুক্ত করে দেন। তিনি যেন কুরআনপ্রেমী মানুষের মাঝে আবারও দরাজ কণ্ঠে, সুললিত ভাষায় কুরআন শোনাতে পারেন, আল্লাহ তায়ালা সেই ব্যবস্থা করে দিন। আমিন।
হে প্রিয় রাহবার! তোমার অপেক্ষায় সারা বাংলা।
বিশ্ব নন্দিত মুফাসসিরে কোরআন আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ১৯৬২ সাল থেকে দেশে এবং ১৯৭৮ সাল থেকে বিদেশের মাটিতে কোরআনের তাফসির করেছেন।
আল্লাহর ইচ্ছায় মাওলানার তাফসীর শুনে অগণিত মানুষ ইসলামের ছায়াতলে এসেছেন।
কিন্তু দুঃখের বিষয় ২০১০ সাল থেকে প্রায় ১০ বছর যাবত তিনি কারাগারে বন্দী আছেন। ১৯৭১ সালে কোনো অপরাধের সাথে তিনি জড়িত ছিলেন একথা বাংলার জনগণ মোটেই বিশ্বাস করে না।
২০১৩ সালের ২৮শে ফেব্রুয়ারি যুদ্ধাপরাধের কথিত অভিযোগে আল্লামা সাঈদীর ফাঁসির রায় ঘোষণা হলে রাজপথে প্রতিবাদ বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে শাহাদাত বরণ করেন ২৪৫ জন নারী-পুরুষ।
এতে প্রমাণিত হয় তিনি সর্বস্তরের মানুষের হৃদয়ের মণিকোঠায় স্থান করে নেয়া একজন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নেতা। অবিলম্বে আমি আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মুক্তি দাবি করছি।
কুরআনের খাদেম আল্লামা সাঈদীকে আমাদের মাঝে ফিরিয়ে দিন।
দেশের স্বাধিনতা ও সার্বভৌমত্বেররস্বার্থে সোচ্চার কন্ঠে আওয়াজ তুলোন । নিরাপরাধ মাওণানা সাঈদী মুক্তির জন্য গর্জে উঠুন।
Free Allama Sayedee - আল্লামা সাঈদীর মুক্তি চাই
বাংলাদেশ খেলাফত ছাত্র মজলিসের কেন্দ্রীয় সভাপতির মায়ের ইন্তেকালে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের শোক প্রকাশ
বাংলাদেশ খেলাফত ছাত্র মজলিসের মুহতারাম কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহাম্মাদ জাকির হুসাইনের সম্মানিতা মাতার ইন্তেকালে গভীর শোক প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।
এক যৌথ শোকবার্তায় ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মোঃ সিরাজুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল সালাহউদ্দিন আইউবী বলেন, বাংলাদেশ খেলাফত ছাত্র মজলিসের সম্মানিত সভাপতি জাকির হুসাইনের সম্মানিতা মায়ের ইন্তেকালে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। তাঁর ইন্তেকালে শুধু বাংলাদেশ খেলাফত ছাত্র মজলিস নয় বরং ইসলামী ছাত্রআন্দোলনের সাথে জড়িত বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মী ও জনশক্তি আজ শোকাহত। মহান আল্লাহ তায়ালা মরহুমাকে মাগফিরাত দান করুন। তাঁর সকল নেক আমল কবুল করে জান্নাতের সর্বোচ্চ মাকাম দান করুন। আমাদের প্রিয় ভাই জাকির হুসাইন ও তাঁর পরিবার-পরিজনকে আল্লাহ তায়ালা ধৈর্য ধারণের তৌফিক দান করুন।
আমরা মহান আল্লাহ তায়ালার নিকট মরহুমার রুহের মাগফেরাত কামনা করছি এবং শোক সন্তপ্ত পরিবার-পরিজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।
উল্লেখ্য তিনি গতকাল ভোরে সাহরির পরপর রোযা পালনকালীন সময়ে ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
মাহে রমজান উপলক্ষে ছাত্রসমাজের প্রতি আমাদের আহ্বান
প্রিয় ছাত্র ভাইয়েরা
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।
পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে আপনাদের প্রতি রইল আন্তরিক সালাম ও মোবারকবাদ। সময়ের পরিক্রমায় দীর্ঘ এক বছর পর পবিত্র মাহে রমজান এখন আমাদের দোরগোড়ায়। এই মাসে সিয়াম সাধনার মাধ্যমে বান্দা খোদাভীতি অর্জনের প্রচেষ্টা চালায়। ‘সিয়াম’ শব্দটি বহুবচন। এক বচনে ‘সাওম’। সাওম অর্থ সংযম অবলম্বন করা, নিবৃত হওয়া, আত্মনিয়ন্ত্রণ করা, বাক সংবরণ করা। পারিভাষিক অর্থে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে সুবহে সাদিক হতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার, স্ত্রী মিলন ও সকল প্রকার পাপ প্রবৃত্তি হতে বিরত থাকাই হলো সিয়াম বা রোজা। মুসলিম জাতির প্রতি মহান আল্লাহর অসীম অনুকম্পা মাহে রমজান। রাসূল (সা.) এ মাসকে ‘শাহরুম মুবারক’ তথা বরকতময় মাস বলে অভিহিত করেছেন। এ মাসে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা মানবজাতিকে ইহলৌকিক ও পরলৌকিক কল্যাণের মূল ভিত্তি তাকওয়াপূর্ণ জীবন গঠনের অনন্য সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছেন। মূলত রমজান মাস হলো প্রশিক্ষণের মাস। এ মাসে অর্জিত প্রশিক্ষণের মাধ্যমেই বাকি ১১ মাস তাকওয়ার ভিত্তিতে নিজেদের পরিচালনা করতে হবে।
তাকওয়া অর্জনের মাস
আপনারা কি জানেন, কেন আমাদের জন্য রোজা ফরজ করা হয়েছে? এই প্রশ্নের উত্তরে মহান আল্লাহ তাআলা কী বলেছেন? এ বিষয়ে মহাগ্রন্থ’ আল কুরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, “হে ঈমানদারগণ! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে যেমন তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর ফরজ করা হয়েছিল। যাতে করে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো।” (সূরা আল বাকারা : ১৮৩) অর্থাৎ সিয়াম সাধনার মাধ্যমে তাকওয়া অর্জনই হচ্ছে রোজা রাখার প্রকৃত উদ্দেশ্য। তাকওয়া শব্দটির উৎস হলো ‘ওয়াকিউন’ যার অর্থ রক্ষা করা, বেঁচে থাকা। তাকওয়ার পারিভাষিক অর্থ হলো সর্বদা আল্লাহর উপস্থিতি মনে জাগ্রত রেখে রোজা অবস্থায় আল্লাহ তাআয়া যা যা নিষেধ করেছেন সেগুলো থেকে বিরত থাকা আর যা যা আদেশ করেছেন সেগুলো যথাযথভাবে পালন করা। শুধু আল্লাহর ভয়ে রোজাদার ব্যক্তি রোজা নষ্ট হয় এমন কোনো কাজ থেকে বিরত থাকেন। কঠিন পিপাসায় কাতর হয়ে এক ফোঁটা পানিও পান করেন না। ক্ষুধার যন্ত্রণায় কোনো খাবার গ্রহণের চিন্তাও করেন না। সারাদিন আল্লাহ তাআলার কথা স্মরণ রেখে রোজা পালন করার মধ্য দিয়ে এভাবেই তাকওয়ার সৃষ্টি হয়। ওমর বিন খাত্তাব (রা.) উবাই বিন কাবকে (রা.) তাকওয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেন। উবাই (রা.) বলেন, আপনি কি কাঁটাযুক্ত পথে চলেছেন? ওমর (রা.) বলেন, হ্যাঁ। উবাই (রা.) বলেন, কীভাবে চলেছেন? ওমর (রা.) বলেন, গায়ে যেন কাঁটা না লাগে সেজন্য চেষ্টা করেছি ও সতর্কভাবে চলেছি। উবাই (রা.) বলেন, এটাই হচ্ছে তাকওয়ার উদাহরণ। এ থেকে সহজে বোঝা যায় আমরা রোজা রেখে যদি মিথ্যা কথা, পরনিন্দা, অশ্লীল কথা ও কাজ, প্রতারণা, গিবত, চোগলখুরী, হিংসা-বিদ্বেষ, অহংকার প্রভৃতি থেকে দূরে থেকে রোজা পালন করতে পারি তাহলে আমাদের পক্ষে তাকওয়া অর্জন করা সম্ভব হবে ইনশাআল্লাহ। রাসূল (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি মিথ্যা কথা ও মন্দ কাজ পরিত্যাগ করতে পারল না, তার খাদ্য ও পানীয় পরিত্যাগ করার আল্লাহ তাআলার কোনো প্রয়োজন নেই।” (বুখারি : ১৭৬৮)
সওয়াব অর্জন ও গুনাহ মাফের মাস
রমজান মাস মানবজাতির জন্য মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে এক বড়ো নিয়ামত। আমরা জানি, এ মাসে একটি ফরজ ইবাদত করলে অন্য মাসে সত্তরটি ফরজ ইবাদত আদায়ের সওয়াব পাওয়া যায়, তেমনিভাবে একটি নফল ইবাদত আদায় করলে ফরজ ইবাদতের সমান সওয়াব পাওয়া যায়। রমজান মাসকে আমরা গুনাহ মাফের মাস হিসেবে গ্রহণ করতে পারি। রাসূল (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস ও আত্মসমালোচনার সাথে রমজানের রোজা রাখে তার পূর্বের সমস্ত গুনাহ মাফ করা হবে এবং যে ব্যক্তি পূর্ণ বিশ্বাসের সাথে সওয়াবের নিয়তে রমজানের রাত্রিসমূহ ইবাদতে কাটাবে তারও পূর্বের গুনাহসমূহ মাফ করা হবে। আর যে ব্যক্তি ঈমান ও আত্মসমালোচনার সাথে কদরের রাত্রি তালাশ করবে তারও পূর্বের গুনাহ মাফ করা হবে।” (বুখারি : ১৭৬৬)
পুরস্কার ও মর্যাদা প্রাপ্তির মাস
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা রোজাদারদের জন্য বিশেষ সম্মান ও পুরস্কার ঘোষণা করেছেন। হাদিসে কুদসিতে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেন, “আল্লাহ তাআলা বলেছেন, সাওম ব্যতীত আদম সন্তানের প্রতিটি কাজই তার নিজের জন্য, কিন্তু সিয়াম আমার জন্য, তাই আমিই এর প্রতিদান দেবো”। সিয়াম ঢালস্বরূপ। তোমাদের কেউ যেন সিয়াম পালনের দিন অশ্লীলতায় লিপ্ত না হয় এবং ঝগড়া-বিবাদ না করে। কেউ যদি তাকে গালি দেয় অথবা তার সাথে ঝগড়া করে, তাহলে সে যেন বলে, আমি রোজাদার। যার কবজায় মুহাম্মদের প্রাণ, তাঁর শপথ! রোজাদারের মুখের গন্ধ আল্লাহ তাআলার নিকট মিসকের গন্ধের চেয়েও অধিক সুগন্ধযুক্ত। রোজাদারের জন্য রয়েছে দুটি খুশি, যখন সে ইফতার করে এবং যখন সে তার রবের সাথে সাক্ষাৎ করবে, তখন রোজার বিনিময়ে আনন্দিত হবে। রোজাদারদের জন্য জান্নাতে ‘রাইয়ান’ নামে একটি বিশেষ দরজা থাকবে সেই দরজা দিয়ে রোজাদাররাই কেবল জান্নাতে প্রবেশ করবে। অন্য ইবাদত অপেক্ষা এই ইবাদতটির বিশেষ বিশেষত্ব রয়েছে, শুধু একটি ইবাদত তথা রোজার ক্ষেত্রে আল্লাহ তাআলা নিজ হাতে বান্দাকে পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
প্রশিক্ষণের মাস
আপনারা কি জানেন, রমজান মাসের কেন এতো গুরুত্ব? রমজান মাসটি গুরুত্ব পাওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ হলো এ মাসে নাজিল করা হয়েছে মানবতার মুক্তির সনদ মহাগ্রন্থ আল কুরআন। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, “রমজান মাস, এই মাসে নাজিল করা হয়েছে আল কুরআন, যা মানবজাতির জন্য পুরোপুরি হেদায়াত ও দ্ব্যর্থহীন শিক্ষা সম্বলিত, যা সত্য ও সঠিক পথ দেখায় এবং সত্য ও মিথ্যার পার্থক্য সুস্পষ্ট করে দেয়।” (সূরা আল বাকারা : ১৮৫) প্রকৃতপক্ষে আল কুরআন হলো মানবজাতির ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনের পথনির্দেশ। আল কুরআন হতে পথের দিশা পেতে হলে আমাদের কুরআন পড়তে হবে, বুঝতে হবে, কুরআনের আলোকে জীবন গঠন করতে হবে। কুরআন অধ্যয়নের অধিক উপযুক্ত সময় হলো রমজান মাস। জ্ঞানার্জন, আত্মগঠন ও আদর্শিক সমাজ বিনির্মাণে দীপ্ত শপথে উজ্জীবিত হয়ে এ মাসে বিশেষভাবে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো অধ্যয়ন করার জন্য অনুরোধ করছি। এ মাসে কমপক্ষে একবার সম্পূর্ণ কুরআন মজিদ অর্থসহ তিলাওয়াত করার চেষ্টা করা উচিত। এছাড়াও অর্থ ও ব্যাখ্যাসহ কমপক্ষে নিম্নোক্ত আয়াত ও সূরাসমূহ মুখস্থ করার চেষ্টা করা প্রয়োজন। (ক) সূরা আল বাকারা : ১৫৩-১৫৭, ১৮৩-১৮৬ (খ) সূরা আলে ইমরান : ১৯০-২০০ (গ) সূরা আত তাওবা : ২০-২৭, ৩৮-৪২ (ঘ) সূরা আল মুমিনুন : ১-১১ (ঙ) সূরা আল হাক্কাহ : ১৯-২৯ (চ) সূরা ইয়াসিন (ছ) সূরা আর রহমান (জ) সূরা আল হুজুরাত (ঝ) সূরা আস সফ।
পাশাপাশি অর্থ ও ব্যাখ্যাসহ নিম্নোক্ত হাদিসসমূহ অধ্যয়ন ও মুখস্থ করার চেষ্টা করা দরকার। (ক) বুখারি : ১৭৬১, ১৭৬৬, ২৬০১, ২৬০৭ (খ) মুসলিম : ২৩৬৩, ২৫৭০ (গ) তিরমিজি : ১৫৬৮, ১৫৮৬, ১৬০৪ (ঘ) রিয়াদুস সালেহিন (প্রথম খণ্ড) : ৪১, ৬৯, ৩৮৬, ৩৮৭। রমজান মাস পুরোপুরি কাজে লাগিয়ে আল্লাহ তাআলার নৈকট্য হাসিল করতে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় ও বেশি বেশি দান-সাদাকা করাও অতীব জরুরি।
হতে হবে কুরআনের সমাজ প্রতিষ্ঠার কর্মী
আপনারা নিশ্চয়ই এ বিষয়ে একমত হবেন যে, মহাগ্রন্থ আল কুরআনের কারণেই রমজানের মর্যাদা এতো বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা যদি ব্যক্তি ও সমাজ-জীবনে কুরআনকে ধারণ করতে পারি, ইনশাআল্লাহ আমাদের ইহকালীন ও পরকালীন মর্যাদা বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে। আমরা রমজান মাসে যেভাবে কুরআনের নির্দেশনা অনুযায়ী নামাজ ও রোজা আদায় করব, আল্লাহকে ভয় করে মিথ্যা ও অশ্লীলতাসহ যাবতীয় খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকব ঠিক একইভাবে বছরের বাকি সময় এর ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখব ইনশাআল্লাহ। সর্বোপরি নিজের জীবনকে কুরআনের আলোকে সাজানোর পাশাপাশি পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রকে কুরআনের আলোকে সাজানোর চেষ্টা করতে হবে। এজন্য আপনাকে অবশ্যই কুরআনের সমাজ প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে শরিক হতে হবে। এ লক্ষ্যে কাজ করছে ছাত্রসমাজের প্রিয় সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। কুরআনের সমাজ প্রতিষ্ঠার কর্মী হিসেবে আমরা চাই আমাদের বাংলাদেশকে কুরআনের আলোকে গড়তে। আপনাকেও আহ্বান করছি কুরআন প্রতিষ্ঠার এ আন্দোলনে। কুরআনের আলোকে সমাজ গড়ার প্রচেষ্টাই হোক মাহে রমজানের শিক্ষা।
প্রিয় ছাত্রসমাজ
বাংলাদেশে ইতোমধ্যে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বেশ বৃদ্ধি পেয়েছে। জাতির এই মহাদুর্যোগে ছাত্রসমাজের ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করা প্রয়োজন। তারই অংশ হিসেবে আমরা নিরলসভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। সমাজের দরিদ্র ও অসহায় মানুয়ের পাশে সাধ্যানুযায়ী সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। সর্বোপরি রাহমানুর রাহিম আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার দরবারে দুআ কবুলের সময়গুলোতে চোখের পানি ফেলে আমাদের সিজদাবনত হতে হবে। নিজেদের গুনাহের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে। মহান আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে, সমগ্র দেশবাসী ও বিশ্ববাসীকে এ কঠিন বিপদ থেকে রক্ষা করুন। মহান আল্লাহ তাআলা তাঁর সব পরিক্ষায় ঈমানি মজবুত দান করুন, পরিক্ষা কঠিন না করুন এবং সব বিপদাপদ ও কঠিন ব্যাধি থেকে হেফাজত করে তাঁর রহমতের চাদর দিয়ে ঢেকে রাখুন। আমিন।
PDF ফাইল ডাউনলোড করতে ক্লিক করুন : https://bit.ly/35cq964
Click here to claim your Sponsored Listing.
Videos (show all)
Category
Website
Address
48/1-A Purana Paltan
Dhaka
NAC 107, North South University, Plot # 15, Block # B, Bashundhara R/A
Dhaka, 1229
Crysta
Dhaka, 1000
VOLUNTEERS toward peace! Crystal Open Scouts is a group of young minds in Scouting. Plz like us to s
Dhaka, 1205
Samatat Open Scout Group has been one of the most active scout groups of Bangladesh since 1976.
48/1/A Purana Paltan
Dhaka, 1000
Bangladesh Islami Chhatrashibir is an Islamic student organization working in Bangladesh.
Banani
Dhaka, 1213
AIESEC is the world's leading youth leadership development organization. Developing the potential of
Medona Tower (Level 12), 28 Mohakhali C/A
Dhaka, 1212
BYLC is a registered non-profit and non-partisan youth leadership training institute in Bangladesh.
Monipur High School& Collage , Mirpur/2
Dhaka, 1216
U.L=Abul Kalam Azad
Dhaka
An organisation, leading by the young students. Our very first event "Winter for Everyone" was successfully took place in Dinajpur. Day by day we are coming up with lots of events....
Savar
Dhaka, 1340
The Student Welfare Association Savar is a nonprofit student organization. It works for the students.