H. M. Abdul Quddus
Nearby schools & colleges
Dhaka 1216
1207
Salipur 1216
1216
Mirpur, Dhaka
Darrussalam Road
Office/House-12 Block-A Avenue-1 Mirpur-10 Dhaka, Dhaka
Dhaka 1216
1216
H. M. Abdul Quddus. It's my new destination. I created this page for my Facebook friends. Especially
আলোকিত শিশু ১৫ রমাদান
তে বরকতময় সাহরী এবং
Channel 24 #আলোকিত_শিশু অনুষ্ঠানে দেখা হবে। ইনশা-আল্লাহ।
১৭ থেকে ২৪ রমাদান।
হাফেজদের মর্যাদা কী? সন্তানকে মাদরাসায় পড়ালে কী লাভ?
হাফেজদের মর্যাদা কী? সন্তানকে মাদরাসায় পড়ালে কী লাভ? হাফেজদের মর্যাদা কী? সন্তানকে মাদরাসায় পড়ালে কী লাভ?https://youtu.be/R1fgo-ptMzg #সূরা_হাশরের_তাফসির ://youtu.be/VihDOkty-To ...
যাদের বয়স চল্লিশ!
--------------------------
সূরা আহকাফে এসেছে- وَ بَلَغَ اَرۡبَعِیۡنَ سَنَۃً - "এবং চল্লিশ বছরে উপনীত হয়..." (৪৬:১৫)
চল্লিশ বছর বয়স পরিপক্ক হওয়ার বয়স। এটা আপনার জীবনের একেবারে মাঝখানের বয়স। এ বয়স নিয়ে আধুনিক সমাজে আমরা একটা পরিভাষা ব্যবহার করি— "মিড লাইফ ক্রাইসিস বা মধ্য বয়সের সঙ্কট"। কারণ, নিশ্চিত মৃত্যুর দিকে আপনি দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছেন। তাই, তারা এটাকে একটা সঙ্কট মনে করে।
কিন্তু ইসলামের ক্ষেত্রে— এ বয়সে উপনীত হওয়ার পর আপনি উপলব্ধি করতে পারেন, আমার জীবনের অর্ধেকটা সময় ইতোমধ্যে পার হয়ে গেছে। অতীতের দিকে তাকিয়ে আমার কৃতজ্ঞ হওয়া উচিত। এখন, নিজের ভবিষ্যতের দিকে না তাকিয়ে আমার ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যতের দিকে তাকাতে হবে। ঠিক এ ব্যাপারটাই আলোচ্য আয়াতে তুলে ধরা হয়েছে।
উক্ত ব্যক্তি তখন বলে- رَبِّ اَوۡزِعۡنِیۡۤ اَنۡ اَشۡکُرَ نِعۡمَتَکَ الَّتِیۡۤ اَنۡعَمۡتَ عَلَیَّ وَ عَلٰی وَالِدَیَّ - "হে আমার প্রতিপালক! আপনি আমাকে আর আমার পিতা-মাতাকে যে নেয়ামত দান করেছেন তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার শক্তি আমাকে দান করুন..."
ইয়া রব! আপনি আমার প্রতি যে কল্যাণ দান করেছেন এবং আমার পিতা-মাতার প্রতি যে কল্যাণ দান করেছেন তার জন্য আমি আপনার নিকট চরম কৃতজ্ঞ।
আমাদের বয়স যখন চল্লিশ আমাদের পিতা-মাতাদের তখন বয়োবৃদ্ধ হয়ে পড়ার কথা। আল্লাহ এখানে আমাদেরকে নিজেদের জন্য এবং পিতা-মাতার জন্য দুআ করা শিক্ষা দিচ্ছেন। আয়াতের এই অংশটুকু আমাদের জীবনের অতীত নিয়ে।
এরপর এসেছে ভবিষ্যতের কথা- وَ اَنۡ اَعۡمَلَ صَالِحًا تَرۡضٰهُ - "আর আমাকে এমন সৎকর্ম করার সামর্থ দিন যাতে আপনি সন্তুষ্ট হোন।"
এখন মৃত্যু যেহেতু খুবই কাছে, ইয়া আল্লাহ! আমাকে এমনসব সৎকাজ করার তৌফিক দান করুন যাতে আপনি সন্তুষ্ট হয়ে যান। وَ اَصۡلِحۡ لِیۡ فِیۡ ذُرِّیَّتِیۡ - "আমার সন্তানদেরকে সৎকর্মপরায়ণ করে আমার প্রতি অনুগ্রহ করুন"
আমি আমার সন্তানদের এবং তাদের পরবর্তী বংশধরদের জন্য দুআ করছি। আমার জন্য তাদেরকে সৎকর্মপরায়ণ করুন। আমি তাদের কারণে তাদের জন্য উদ্বিগ্ন নই। কারণ, আমি জানি বিচার দিবসে যখন আমি আল্লাহর সামনে দাঁড়াবো তখন আমাকে জিজ্ঞেস করা হবে— তোমার সন্তানদের কিভাবে বড় করেছো?
যদি এই কাজ আমি ঠিকভাবে সম্পাদন করতে না পারি, তখন তারাও তাদের সন্তানদের সঠিক উপায়ে বড় করবে না। এভাবে ক্রমান্বয়ে পরিস্থিতি শুধু খারাপ হবে। ক্ষতিটা শুরু হবে আমাকে দিয়ে। তাই, আমার জন্য তাদেরকে সৎকর্মপরায়ণ করে দিন। ۚؕ اِنِّیۡ تُبۡتُ اِلَیۡکَ - "আমি অনুশোচনাভরে আপনার দিকে ফিরে আসছি।" وَ اِنِّیۡ مِنَ الۡمُسۡلِمِیۡنَ - "এবং নিশ্চয় আমি মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত।"
এর পরের আয়াতে আল্লাহ বলেন- اُولٰٓئِکَ الَّذِیۡنَ نَتَقَبَّلُ عَنۡهُمۡ اَحۡسَنَ مَا عَمِلُوۡا وَ نَتَجَاوَزُ عَنۡ سَیِّاٰتِهِمۡ فِیۡۤ اَصۡحٰبِ الۡجَنَّۃِ ؕ وَعۡدَ الصِّدۡقِ الَّذِیۡ کَانُوۡا یُوۡعَدُوۡنَ - "এরাই, যাদের উৎকৃষ্ট আমলগুলো আমি কবুল করি এবং তাদের মন্দ কাজগুলো ক্ষমা করে দেই। তারা জান্নাতবাসীদের অন্তর্ভুক্ত। তাদেরকে যে ওয়াদা দেয়া হয়েছে, তা সত্য ওয়াদা। "
[দুয়াটা মুখস্ত করতে পারেন- رَبِّ اَوۡزِعۡنِیۡۤ اَنۡ اَشۡکُرَ نِعۡمَتَکَ الَّتِیۡۤ اَنۡعَمۡتَ عَلَیَّ وَ عَلٰی وَالِدَیَّ وَ اَنۡ اَعۡمَلَ صَالِحًا تَرۡضٰهُ وَ اَصۡلِحۡ لِیۡ فِیۡ ذُرِّیَّتِیۡ ۚؕ اِنِّیۡ تُبۡتُ اِلَیۡکَ وَ اِنِّیۡ مِنَ الۡمُسۡلِمِیۡنَ - হে আমার প্রতিপালক! তুমি আমাকে আর আমার পিতা-মাতাকে যে নিয়ামাত দান করেছ তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার শক্তি আমাকে দান কর, আর আমাকে এমন সৎকর্ম করার সামর্থ দাও যাতে তুমি সন্তুষ্ট হও, আমার সন্তানদেরকে সৎকর্মপরায়ণ করে আমার প্রতি অনুগ্রহ কর, আমি অনুশোচনাভরে তোমার দিকে ফিরে আসছি, আর আমি অনুগত বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত। (৪৬:১৫)
I have reached 200 followers! Thank you for your continued support. I could not have done it without each of you. 🙏🤗🎉
পারিবারিক বন্ধন আরও সুদৃঢ় করতে পড়ুন :
যৌতুকের মামলায় বাদীনি সাক্ষ্য দিতে এসেছেন। ভদ্রমহিলা বললেন, তার স্বামী কোন মাসের কত তারিখ কত টাকা যৌতুক চেয়েছেন। বিচারও চাইলেন। সাক্ষী জবানবন্দি প্রদানের সময় আসামীর উপস্থিতি স্বাভাবিক। হাজিরাও দেখলাম। তবু জিজ্ঞেস করলাম, দেখে বলুন আসামী ডকে আছে কি না!
দেখি ভদ্রমহিলা আসামীর দিকে একপলক তাকিয়েই বললেন, আছে।
এতক্ষণ তার কণ্ঠে যে দৃঢ়তা দেখেছি "আসামী আছে" এ কথা বলার সময় সে দৃঢ়তা পেলাম না। স্বামীর চোখের দিকে তাকাতেই তার চেহারা বদলে গেল। আমি মহিলার চোখের দিকে তাকিয়েই বুঝলাম তিনি মন থেকে চান না আসামীর শাস্তি হোক অথবা জিদের বসে মামলা করেছেন বলে এতক্ষণ মিথ্যে বলেছেন!
জিজ্ঞেস করলাম, তালাক কি হয়ে গেছে?
জবাবে মাথা নাড়িয়ে বলল, না স্যার এখনো হয়নি।
আমি তার কাছে জানতে চাইলাম, আপনাদের কি সন্তান আছে?
জবাবে বলল, স্যার একটা বাচ্চা হয়েছিল। মারা গেছে!
এ কথা বলার পরই মহিলার চোখ ভিজে যায়।
তাকে বললাম, আপনাদের একটা সন্তান মারা গেছে। এ সময়তো উচিত দু'জন দু'জনকে সান্ত্বনা দেয়া। এমন সময় মামলা মোকদ্দমা করে সংসার ভাঙ্গার কোন মানে হয়?
এরপর প্রস্তাব দিলাম, করবেন সংসারটা? একটাইতো জীবন। কাটিয়ে ফেলুন না!
আমার মনে হলো এ কথাটা শোনার জন্যই বা এমন একটা প্রস্তাব পাওয়ার জন্যই তিনি প্রতীক্ষা করছিলেন। ভদ্রমহিলা বললেন, স্যার আপনি যা ভালো মনে করেন!
আমার শুনে ভীষণ ভালো লাগল।
ভদ্রমহিলার স্বামীকে সামনে আসতে বললাম। জিজ্ঞেস করলাম, উনি তো আমার কথা শুনবেন। আপনি শুনবেন?
আসামী একমুহূর্ত বিলম্ব না করে বললেন, শুনব স্যার।
আমি সঙ্গে সঙ্গে বললাম, আজই আপনার স্ত্রীকে নিয়ে যান।
ভদ্রলোক কেঁদে দিলেন। তিনি বললেন, অবশ্যই নিয়ে যাব স্যার।
ভদ্রমহিলাকে দিয়ে মামলা প্রত্যাহার করালাম। দ্রুত করলাম। কারণ জানি এটা মানুষের মন। আবার যদি সিদ্ধান্ত বদলান!
অবাক করা বিষয় হলো দু'জন বের হওয়ার মিনিট দুয়েক পর মেয়ের ভাই, বিজ্ঞ আইনজীবীদ্বয় আবার আসলেন। মেয়ের ভাই বললেন, স্যার এখান থেকে না নিয়ে আমাদের বাসা থেকে নিলে ভালো হয়।
আমি বুঝতে পারলাম তার কথা। এদেশের সামাজিক প্রেক্ষাপটে মেয়ে শ্বশুর বাড়ি থেকে রাগ করে এলে বা তাকে পাঠিয়ে দিলে কেউ নিতে না আসলে নিজে ফিরে যাওয়া ভালো দেখায় না!
ভদ্রলোককে বললাম, আজ সন্ধ্যায় শ্বশুরের বাসায় মিষ্টি নিয়ে যাবেন। শ্বশুর শাশুড়িকে সালাম করবেন। এরপর রাতে খেয়ে বউ নিয়ে আসবেন।
ভদ্রলোক বললেন, আমি মিষ্টি নিয়ে যাব স্যার।
মেয়ের ভাইকে বললাম, উনি আপনাদের বাসায় গেলে পুরনো কথা তুলবেন না।
মেয়ের ভাই মাথা নেড়ে সম্মতি দিলেন।
আরও বললাম, তাহলে তাড়াতাড়ি যান। বোনজামাই যাচ্ছে। ভালো করে বাজার করেন। পোলাও রান্না করবেন কিন্তু!
মেয়ের ভাই পান খায়। হাসায় তার লাল দাঁত দেখে ফেললাম!
উভয়পক্ষ আদালতকক্ষ ছেড়ে বের হওয়ার সময় দেখি প্রথম প্রেমে পড়ার মত স্বামী স্ত্রী পরষ্পরের দিকে তাকিয়ে আছে!
সে তাকানোয় কী যে মায়া ও হালকা লজ্জ্বা লেগে আছে তা লিখে বোঝাতে পারব না!
আমি জানি না আজ রাতে মেয়ের বাড়িতে পোলাও রান্না হয়েছে কি না, স্বামী এসে স্ত্রীকে নিয়ে যাচ্ছেন কি না শুধু এটুকু জানি যদি সব প্রতিশ্রুত কথানুযায়ী হয় তাহলে দুই পরিবারে কী যে আনন্দ হচ্ছে!
অন্যের আনন্দের কথা ভাবতে গিয়ে আমারই চোখ ভিজে যাচ্ছে। আহা! ওনাদের সন্তান যদি বেঁচে থাকত! তাহলে সেও কী আনন্দ পেত!
কী অদ্ভুত আমাদের অনুভূতি। বাচ্চার কথা ভাবতে গিয়েও চোখে পানি জমে গেল।
আমার অনুভূতি প্রকাশের মাধ্যম অভিন্ন। অতি আনন্দে ও অতি কষ্টে আমার চোখ ভিজে যায়!
কাজী শরীফ
মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট, চট্টগ্রাম।
৩০ এপ্রিল, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ।
#নামাজের_ব্যাপারে_একটি_শিক্ষনীয়_গল্প:
তিন বন্ধু মিলে সিঙ্গাপুরে বেড়াতে গেলেন।
তারা সেখানে একটি হোটেলে উঠলো এবং রুম পেয়েছেন ৭৫ তলায়।
তবে হোটেলের নিয়ম অনুযায়ী,রাত ১২ টার পর লিফ্ট বন্ধ থাকে!
একদিন তারা ঘুরতে বের হল। কিন্তু তারা ফিরতে দেরি হয়ে গেল। হোটেলে এসে দেখে লিফ্ট বন্ধ, তারা চিন্তায় পড়ে গেলেন, কিভাবে ৭৫ তলায় হেঁটে উঠবে!
পরে সিদ্ধান্ত নিয়ে তারা উপরে উঠতে লাগল। তাদের মধ্যে একজন গল্প আরম্ভ করল!
তার গল্প শেষ হতে হতে তারা,২৫ তলায় পৌঁছাতে সক্ষম হলো !
এরপর আরেক জন
গানকরা আরম্ভ করল। গান শুনতে শুনতে দেখে ৫০ তলায় এসে গেছে !
এখন কি করা যায়?
তারপর তৃতীয় জন, গান , গল্প কিছুই পারেন না, তাই তার জীবনের ঘটে যাওয়া দুঃখ-কষ্ঠের কথা শুরু করলেন । তার সব ঘটনা যখন বলা শেষ হয়, তখন তারা ৭৫ তলায় গিয়ে পৌছে!
তারা যখন দরজা খুলতে গেল,দুর্ভাগ্য ক্রমে দেখা গেল ,চাবিটা রিসেপশনে!
তবে এখনকি আর সম্ভব! নিচে গিয়ে চাবি নিয়ে আসা?
এমনি ভাবে, আমরা যখন জীবনের তিনটি ধাপ পার করে, কবরে গিয়ে পৌছবো , যখন জান্নাতের সামনে গিয়ে দেখবো চাবিতো(নামাজ) দুনিয়ায় থেকে আনতে পারিনি , তখন কি আর দুনিয়ায় ফিরে যাওয়া সম্ভব হবে?
তাই প্রতিদিন জামাতের সাথে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে, জান্নাতের চাবিটা সাথে রাখার প্রয়োজন নয় কি?
মহান রাব্বুল আল আমিন, আমাদের সবাইকে বুঝবার তৌফিক দান করুন।
(আমিন)
বাংলাভিশন। সোনামনিদের রমাদান ২০২৩। অতিথি হিসেবে ছিলাম।
যাকাতের পরিচয়
আভিধানিক অর্থ :
الطهارة والنماء والبركة والمدح অর্থাৎ পবিত্রতা, ক্রমবৃদ্ধি, আধিক্য ও প্রশংসা। উল্লিখিত সব কয়টি অর্থই কুরআন ও হাদীছে উদ্ধৃত হয়েছে।
পারিভাষিক অর্থ : ইসলামী শরী‘আত কর্তৃক নির্ধারিত নিছাব পরিমাণ মালের নির্দিষ্ট অংশ নির্দিষ্ট খাতে ব্যয় করার নাম যাকাত।
যাকাত ফরয হওয়ার শর্ত সমূহ:
১. মুসলমান হওয়া।
২. বালেগ হওয়া।
৩. আকেল/জ্ঞানী হওয়া।
৪. ছাহেবে নেছাব হওয়া।
কতটুকু পরিমাণ মাল থাকলে ছাহেবে নিছাব ধরা যাবে:
১. সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণ।
২. সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপা।
৩. বা (সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপার সমমূল্যের) অর্থ-কড়ি।
৪. বা (সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপার সমমূল্যের) ব্যবসায়িক মাল।
অথবা কিছু স্বর্ণ, কিছু রুপা, কিছু নগদ ক্যাশ ও কিছু ব্যবসায়িক মাল সব মিলিয়ে যদি (সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপার সমমূল্যের) হয় তাহলে সেই ব্যক্তির উপর যাকাত ফরয হবে এবং এই পরিমাণ সম্পদ এক বছর তাঁর কাছে থাকলেই তাঁকে যাকাত দিতে হবে।
মালের কতটুকু অংশ যাকাত দিতে হয়:
সমুদয় মালের ৪০ ভাগের একভাগ বা শত করা আড়াই টাকা বা হাজারে ২৫ টাকা বা এক লক্ষে ২,৫০০/= টাকা।
কুরআন ও হাদীছের অনেক স্থানে ‘যাকাত’-কে ‘ছাদাক্বাহ্’ নামে অভিহিত করা হয়েছে। কুরআন মাজীদের ৮ টি মাক্কী ও ২২টি মাদানী সূরার ৩০টি আয়াতে ‘যাকাত’ শব্দটি উল্লিখিত হয়েছে। এর মধ্যে ২৭টি আয়াতে ‘ছালাত’-এর সাথেই ‘যাকাত’ শব্দ এসেছে।
(ফিক্বহুল মুয়াস্সার ১২১ পৃঃ।)
# যাকাতের গুরুত্ব:
وَ اَقِیْمُوا الصَّلٰوةَ وَ اٰتُوا الزَّكٰوةَ ؕ وَ مَا تُقَدِّمُوْا لِاَنْفُسِكُمْ مِّنْ خَیْرٍ تَجِدُوْهُ عِنْدَ اللّٰهِ ؕ اِنَّ اللّٰهَ بِمَا تَعْمَلُوْنَ بَصِیْرٌ۱۱۰
তোমরা সালাত আদায় কর এবং যাকাত প্রদান কর। তোমরা যে উত্তম কাজ নিজেদের জন্য অগ্রে প্রেরণ করবে তা আল্লাহর নিকটে পাবে। নিশ্চয়ই তোমরা যা কর আল্লাহ তা দেখছেন।
{সূরা বাকারা-১১০}
অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে-
وَ اَقِیْمُوا الصَّلٰوةَ وَ اٰتُوا الزَّكٰوةَ
وَ اَطِیْعُوا الرَّسُوْلَ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُوْنَ۵۶
তোমরা সালাত আদায় কর, যাকাত দাও এবং রাসূলের আনুগত্য কর যাতে তোমরা অনুগ্রহভাজন হতে পার।
{সূরা নূর-৫৬}
কুরআনের দৃষ্টিতে প্রকৃত পুণ্যশীলদের পরিচয় যেখানে দেওয়া হয়েছে সেখানে সালাত-যাকাতের উল্লেখ এসেছে। (সূরা বাকারা ১৭৭)
۞لَّيۡسَ ٱلۡبِرَّ أَن تُوَلُّواْ وُجُوهَكُمۡ قِبَلَ ٱلۡمَشۡرِقِ وَٱلۡمَغۡرِبِ وَلَٰكِنَّ ٱلۡبِرَّ مَنۡ ءَامَنَ بِٱللَّهِ وَٱلۡيَوۡمِ ٱلۡأٓخِرِ وَٱلۡمَلَٰٓئِكَةِ وَٱلۡكِتَٰبِ وَٱلنَّبِيِّـۧنَ وَءَاتَى ٱلۡمَالَ عَلَىٰ حُبِّهِۦ ذَوِي ٱلۡقُرۡبَىٰ وَٱلۡيَتَٰمَىٰ وَٱلۡمَسَٰكِينَ وَٱبۡنَ ٱلسَّبِيلِ وَٱلسَّآئِلِينَ وَفِي ٱلرِّقَابِ وَأَقَامَ ٱلصَّلَوٰةَ وَءَاتَى ٱلزَّكَوٰةَ وَٱلۡمُوفُونَ بِعَهۡدِهِمۡ إِذَا عَٰهَدُواْۖ وَٱلصَّٰبِرِينَ فِي ٱلۡبَأۡسَآءِ وَٱلضَّرَّآءِ وَحِينَ ٱلۡبَأۡسِۗ أُوْلَٰٓئِكَ ٱلَّذِينَ صَدَقُواْۖ وَأُوْلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلۡمُتَّقُونَ
তোমরা তোমাদের মুখমন্ডল পূর্ব বা পশ্চিম দিকে প্রত্যাবর্তিত করলেই তাতে পুণ্য নেই, বরং পুণ্য তার যে ব্যক্তি আল্লাহ, আখিরাত, মালাইকা/ফেরেশতা, কিতাব ও নাবীগণের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে এবং তাঁরই প্রেমে ধন-সম্পদের প্রতি আকর্ষণ থাকা সত্ত্বেও সে তা আত্মীয়-স্বজন, পিতৃহীন, দরিদ্র, পথিক ও ভিক্ষুকদেরকে এবং দাসত্ব মোচনের জন্য ব্যয় করে, আর সালাত প্রতিষ্ঠিত করে ও যাকাত প্রদান করে এবং অঙ্গীকার করলে তা পূরণ করে এবং যারা অভাবে ও ক্লেশে এবং যুদ্ধকালে ধৈর্যশীল তারাই সত্য পরায়ণ এবং তারাই ধর্মভীরু।
-سورة البقرة، آية ١٧٧
মুমিনের বন্ধু কারা-এই প্রশ্নের উত্তরেও সালাত-যাকাতের প্রসঙ্গ শামিল রয়েছে। (সূরা মায়েদা : ৫৫)
إِنَّمَا وَلِيُّكُمُ ٱللَّهُ وَرَسُولُهُۥ وَٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ ٱلَّذِينَ يُقِيمُونَ ٱلصَّلَوٰةَ وَيُؤۡتُونَ ٱلزَّكَوٰةَ وَهُمۡ رَٰكِعُونَ
তোমাদের বন্ধু তো কেবল আল্লাহ, তাঁর রাসূল ও মুমিনগণ যারা সালাত কায়েম করে, যাকাত দেয় এবং তারা বিনীত ।
-سورة المائدة، آية ٥٥
মসজিদ আবাদকারীদের পরিচয় জানতে চাইলেও সালাত-যাকাত তাদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। (সূরা তাওবা : ১৮)
إِنَّمَا يَعۡمُرُ مَسَٰجِدَ ٱللَّهِ مَنۡ ءَامَنَ بِٱللَّهِ وَٱلۡيَوۡمِ ٱلۡأٓخِرِ وَأَقَامَ ٱلصَّلَوٰةَ وَءَاتَى ٱلزَّكَوٰةَ وَلَمۡ يَخۡشَ إِلَّا ٱللَّهَۖ فَعَسَىٰٓ أُوْلَٰٓئِكَ أَن يَكُونُواْ مِنَ ٱلۡمُهۡتَدِينَ
তারাই তো আল্লাহ্র মসজিদের আবাদ করবে, যারা ঈমান আনে আল্লাহ্ ও শেষ দিনের প্রতি, সালাত কায়েম করে, যাকাত দেয় এবং আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কাউকে ভয় করে না। অতএব, আশা করা যায়, তারা হবে সৎপথ প্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত ।١٨-سورة التوبة، آية
ভূপৃষ্ঠের ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব লাভের পরও মুমিনদের অবস্থা কী তা জানতে চাইলে সালাত-যাকাতই অগ্রগণ্য। (সূরা হজ্জ্ব : ৪১)
ٱلَّذِينَ إِن مَّكَّنَّٰهُمۡ فِي ٱلۡأَرۡضِ أَقَامُواْ ٱلصَّلَوٰةَ وَءَاتَوُاْ ٱلزَّكَوٰةَ وَأَمَرُواْ بِٱلۡمَعۡرُوفِ وَنَهَوۡاْ عَنِ ٱلۡمُنكَرِۗ وَلِلَّهِ عَٰقِبَةُ ٱلۡأُمُورِ
তারা এমন লোক যাদেরকে আমরা যমীনের বুকে প্রতিষ্ঠিত করলে সালাত কায়েম করবে, যাকাত দেবে এবং সৎকাজের নির্দেশ দেবে ও অসৎকাজে নিষেধ করবে; আর সব কাজের চুড়ান্ত পরিণতি আল্লাহ্র ইখতিয়ারে।
-سورة الحج، آية ٤١
দ্বীনের মৌলিক পরিচয় পেতে চাইলে সালাত-যাকাত ছাড়া পরিচয় দান অসম্ভব। (সূরা বাইয়েনা : ৫)
وَمَآ أُمِرُوٓاْ إِلَّا لِيَعۡبُدُواْ ٱللَّهَ مُخۡلِصِينَ لَهُ ٱلدِّينَ حُنَفَآءَ وَيُقِيمُواْ ٱلصَّلَوٰةَ وَيُؤۡتُواْ ٱلزَّكَوٰةَۚ وَذَٰلِكَ دِينُ ٱلۡقَيِّمَةِ
তারাতো আদিষ্ট হয়েছিল আল্লাহর আনুগত্যে বিশুদ্ধ চিত্ত হয়ে একনিষ্ঠভাবে তাঁর ইবাদাত করতে এবং সালাত কায়েম করতে ও যাকাত প্রদান করতে; এটাই সু-প্রতিষ্ঠিত ধর্ম।
-سورة البينة، آية ٥
সৎকর্মপরায়ণদের বৈশিষ্ট্য ও কর্মের তালিকায় সালাত-যাকাতের প্রসঙ্গ অনিবার্য। (সূরা লুকমান : ৪)
ٱلَّذِينَ يُقِيمُونَ ٱلصَّلَوٰةَ وَيُؤۡتُونَ ٱلزَّكَوٰةَ وَهُم بِٱلۡأٓخِرَةِ هُمۡ يُوقِنُونَ
যারা সালাত কায়েম করে এবং যাকাত দেয়, আর তারাই আখিরাতে নিশ্চিত বিশ্বাসী;
-سورة لقمان، آية ٤
أُوْلَٰٓئِكَ عَلَىٰ هُدٗى مِّن رَّبِّهِمۡۖ وَأُوْلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلۡمُفۡلِحُونَ
তারাই তাদের রবের পক্ষ থেকে হিদায়াতের উপর আছে এবং তারাই সফলকাম ।
-سورة لقمان، آية ٥
কুরআন মজীদ কাদের জন্য হেদায়েত ও শুভসংবাদ দাতা-এর উত্তর পেতে চাইলেও সালাত-যাকাত অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। (সূরা নামল : ৩)
هُدٗى وَبُشۡرَىٰ لِلۡمُؤۡمِنِينَ
পথনির্দেশ ও সুসংবাদ মুমিনদের জন্য ।
-سورة النمل، آية ٢
ٱلَّذِينَ يُقِيمُونَ ٱلصَّلَوٰةَ وَيُؤۡتُونَ ٱلزَّكَوٰةَ وَهُم بِٱلۡأٓخِرَةِ هُمۡ يُوقِنُونَ
যারা সালাত কায়েম করে ও যাকাত দেয় আর তারাই আখেরাতে নিশ্চিত বিশ্বাস রাখে ।
-سورة النمل، آية ٣
عَنِ ابْنِ عُمَرَ رضى الله عنهما قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم بُنِىَ الإِسْلاَمُ عَلَى خَمْسٍ شَهَادَةِ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُوْلُ اللهِ، وَإِقَامِ الصَّلاَةِ، وَإِيْتَاءِ الزَّكَاةِ، وَالْحَجِّ، وَصَوْمِ رَمَضَانَ-
ইবনু ওমর (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘ইসলাম পাঁচটি স্তম্ভের উপর দন্ডায়মান। ১- আল্লাহ্ ব্যতীত কোন সত্য ইলাহ নেই এবং মুহাম্মাদ (ছাঃ) আল্লাহর রাসূল-এ কথার সাক্ষ্য প্রদান করা। ২- ছালাত ক্বায়েম করা। ৩- যাকাত আদায় করা। ৪- হজ্জ সম্পাদন করা এবং ৫- রামাযানের ছিয়াম পালন করা।
[1]. বুখারী হা/৪, ‘ঈমান’ অধ্যায়, বঙ্গানুবাদ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন্স) ১/১৪ পৃঃ; মুসলিম হা/১৬; মিশকাত হা/৩, বঙ্গানুবাদ মিশকাত (এমদাদিয়া) ১/১৬ পৃঃ।
যাকাত ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের একটি : আল্লাহ কর্তৃক মানব জাতির জন্য একমাত্র মনোনীত দ্বীন ইসলাম পাঁচটি স্তম্ভের উপর দন্ডায়মান। আর যাকাত হল তার তৃতীয় স্তম্ভ। হাদীছে এসেছে,
হাদীছে এসেছে,
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ إِسْمَاعِيلَ، قَالَ حَدَّثَنِي قَيْسُ بْنُ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ جَرِيرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ بَايَعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى إِقَامِ الصَّلاَةِ، وَإِيتَاءِ الزَّكَاةِ، وَالنُّصْحِ لِكُلِّ مُسْلِمٍ.
জারীর ইব্নু ‘আবদুল্লাহ্ আল-বাজালী (রাঃ) থেকে বর্ণিত: তিনি বলেছেন: আমি আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট বায়‘আত গ্রহণ করেছি সালাত কায়িম করার, যাকাত প্রদান করার এবং সমস্ত মুসলিমের মঙ্গল কামনা করার।
{সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৫৭
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস}
# যাকাতের ফজিলত:
সূরা নিসার ১৬২ নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাদের জন্য‘আজরুন আযীম’-এর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে-
وَ الْمُقِیْمِیْنَ الصَّلٰوةَ وَ الْمُؤْتُوْنَ الزَّكٰوةَ وَ الْمُؤْمِنُوْنَ بِاللّٰهِ وَ الْیَوْمِ الْاٰخِرِ ؕ اُولٰٓىِٕكَ سَنُؤْتِیْهِمْ اَجْرًا عَظِیْمًا۠۱۶۲
এবং যারা সালাত আদায় করে, যাকাত দেয় এবং আল্লাহ ও পরকালে ঈমান রাখে আমি তাদেরকে মহাপুরস্কার দিব।
(সূরা নিসার ১৬২)
অন্য আয়াতে যাকাতের গুরুত্বপূর্ণ সুফল বর্ণনা করে আল্লাহ তাআলা বলেন-
خُذْ مِنْ اَمْوَالِهِمْ صَدَقَةً تُطَهِّرُهُمْ وَ تُزَكِّیْهِمْ بِهَا وَصَلِّ عَلَیْهِمْ ؕ اِنَّ صَلٰوتَكَ سَكَنٌ لَّهُمْ ؕ وَ اللّٰهُ سَمِیْعٌ عَلِیْمٌ۱۰۳
তাদের সম্পদ থেকে সদকা গ্রহণ করুন, যার দ্বারা আপনি তাদেরকে পবিত্র করবেন এবং পরিশোধিত করবেন এবং আপনি তাদের জন্য দুআ করবেন। আপনার দুআ তো তাদের জন্য চিত্ত স্বস্তিকর। আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।’-সূরা তাওবা : ১০৩
যাকাত আদায় করলে সম্পদ বৃদ্ধি পায় : বাহ্যিক দৃষ্টিতে যাকাত আদায়ের মাধ্যমে সম্পদ কমে যায় বলে মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে তা কমে যায় না; বরং তা বৃদ্ধি পায়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
وَمَا آتَيْتُمْ مِنْ رِبًا لِيَرْبُوَ فِيْ أَمْوَالِ النَّاسِ فَلاَ يَرْبُوْ عِنْدَ اللهِ وَمَا آتَيْتُمْ مِنْ زَكَاةٍ تُرِيْدُوْنَ وَجْهَ اللهِ فَأُولَئِكَ هُمُ الْمُضْعِفُوْنَ-
আর মানুষের সম্পদ বৃদ্ধি পাবে বলে তোমরা সূদে যা দিয়ে থাক, আল্লাহর নিকট তা বৃদ্ধি পায় না; কিন্তু আল্লাহর সন্তুষ্টিলাভের জন্য যে যাকাত তোমরা দিয়ে থাক তা-ই বৃদ্ধি পায়, তারাই সমৃদ্ধিশালী’ (রুম ৩০/৩৯)।
يَمْحَقُ اللهُ الرِّبَا وَيُرْبِي الصَّدَقَاتِ وَاللهُ لَا يُحِبُّ كُلَّ كَفَّارٍ أَثِيْمٍ-
আল্লাহ সূদকে ধ্বংস করেন এবং দানকে বর্ধিত করেন। আল্লাহ কোন অকৃতজ্ঞ পাপীকে
ভালবাসেন না’ (বাক্বারাহ ২/২৭৬)।
অতএব যাকাত আদায় করলে এবং দান করলে সম্পদ কমে যায় না। বরং তা বৃদ্ধি পায়। যে কোন মাধ্যমে আল্লাহ তার রিযিক বৃদ্ধি করে দেন।
যাকাত আদায়কারী আখেরাতে সফলকাম হবে এবং সবরকম চিন্তামুক্ত থাকবে : আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
الَّذِيْنَ يُقِيْمُوْنَ الصَّلَاةَ وَيُؤْتُوْنَ الزَّكَاةَ وَهُمْ بِالْآخِرَةِ هُمْ يُوْقِنُوْنَ- أُولَئِكَ عَلَى هُدًى مِنْ رَبِّهِمْ وَأُولَئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُوْنَ-
‘যারা ছালাত ক্বায়েম করে এবং যাকাত দেয়, তারাই আখেরাতে নিশ্চিত বিশ্বাসী; তারাই তাদের প্রতিপালকের নির্দেশিত পথে আছে এবং তারাই সফলকাম’ (লুকমান ৩১/৪-৫)।
হাফ্স ইবনু ‘উমর (রহঃ) ... ‘আবদুল্লাহ ইবনু আবূ আওফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, লোকজন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট নিজেদের সাদকা নিয়ে উপস্থিত হতো তখন তিনি বলতেনঃ আল্লাহ! অমুকের প্রতি রহমত বর্ষণ করুন। একবার আমার পিতা সা’দকা নিয়ে হাযির হলে তিনি বললেনঃ হে আল্লাহ! আবূ আওফা’র বংশধরের প্রতি রহমত বর্ষণ করুন।
باب صَلاَةِ الإِمَامِ وَدُعَائِهِ لِصَاحِبِ الصَّدَقَةِ وَقَوْلِهِ: {خُذْ مِنْ أَمْوَالِهِمْ صَدَقَةً تُطَهِّرُهُمْ وَتُزَكِّيهِمْ بِهَا وَصَلِّ عَلَيْهِمْ إِنَّ صَلاَتَكَ سَكَنٌ لَهُمْ} حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ عُمَرَ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ عَمْرٍو، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي أَوْفَى، قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِذَا أَتَاهُ قَوْمٌ بِصَدَقَتِهِمْ قَالَ " اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى آلِ فُلاَنٍ ". فَأَتَاهُ أَبِي بِصَدَقَتِهِ، فَقَالَ " اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى آلِ أَبِي أَوْفَى
হাদীছে এসেছে,
عَنْ جَابِرٍ قَالَ قَالَ رَجُلٌ مِنَ الْقَوْمِ : يَا رَسُوْلَ اللهِ أَرَأَيْتَ إِذَا أَدَّى رَجُلٌ زَكَاةَ مَالِهِ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ مَنْ أَدَّى زَكَاةَ مَالِهِ فَقَدْ ذَهَبَ عَنْهُ شَرُّهُ-
জাবের (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, সম্প্রদায়ের এক ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! যদি কেউ তার সম্পদের যাকাত আদায় করে তাহলে কি হবে? রাসূল (ছাঃ) বললেন, যদি কেউ তার সম্পদের যাকাত আদায় করে, তাহলে তার সম্পদের অকল্যাণ ও অমঙ্গল দূর হয়ে যাবে।
(ছহিহ তারগিব-৭৪৩)
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ عَنْ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ مَا نَقَصَتْ صَدَقَةٌ مِنْ مَالٍ وَمَا زَادَ اللهُ عَبْدًا بِعَفْوٍ إِلاَّ عِزًّا وَمَا تَوَاضَعَ أَحَدٌ لِلَّهِ إِلاَّ رَفَعَهُ اللهُ-
আবু হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘দান সম্পদ কমায় না; ক্ষমা দ্বারা আল্লাহ কোন বান্দার সম্মান বৃদ্ধি ছাড়া হ্রাস করেন না এবং যে কেহ আল্লাহর ওয়াস্তে বিনয় প্রকাশ করে, আল্লাহ তাকে উন্নত করেন।
মুসলিম হা/২৫৮৮; মিশকাত হা/১৮৮৯।
# যাকাত না দিলে শাস্তি কি:
ফরয হওয়া সত্ত্বেও যারা যাকাত আদায় করে না তারা কত বড় ক্ষতিগ্রস্ত-তার শিকার! যাকাতের সকল সুফল থেকে বঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশি আল্লাহর আদেশ অমান্য করার কারণে তাদেরকে যে মর্মন্তুদ শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে তা-ও কুরআন মজীদে বলে দেওয়া হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে-
وَٱلَّذِينَ يَكۡنِزُونَ ٱلذَّهَبَ وَٱلۡفِضَّةَ وَلَا يُنفِقُونَهَا فِي سَبِيلِ ٱللَّهِ فَبَشِّرۡهُم بِعَذَابٍ أَلِيمٖ
আর যারা স্বর্ণ ও রৌপ্য পুঞ্জীভূত করে এবং তা আল্লাহ্র পথে ব্যয় করে না আপনি তাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির সুসংবাদ দিন ।
سورة التوبة, آية ٣٤
يَوۡمَ يُحۡمَىٰ عَلَيۡهَا فِي نَارِ جَهَنَّمَ فَتُكۡوَىٰ بِهَا جِبَاهُهُمۡ وَجُنُوبُهُمۡ وَظُهُورُهُمۡۖ هَٰذَا مَا كَنَزۡتُمۡ لِأَنفُسِكُمۡ فَذُوقُواْ مَا كُنتُمۡ تَكۡنِزُونَ
যেদিন জাহান্নামের আগুনে সেগুলোকে উত্তপ্ত করা হবে এবং সে সব দিয়ে তাদের কপাল, পাঁজর আর পিঠে দাগ দেয়া হবে, বলা হবে, এগুলোই তা যা তোমরা নিজেদের জন্য পুঞ্জীভূত করতে। কাজেই তোমরা যা পুঞ্জীভূত করেছিলে তার স্বাদ ভোগ কর ।
-سورة التوبة, آية ٣٥
وَ لَا یَحْسَبَنَّ الَّذِیْنَ یَبْخَلُوْنَ بِمَاۤ اٰتٰىهُمُ اللّٰهُ مِنْ فَضْلِهٖ هُوَ خَیْرًا لَّهُمْ ؕ بَلْ هُوَ شَرٌّ لَّهُمْ ؕ سَیُطَوَّقُوْنَ مَا بَخِلُوْا بِهٖ یَوْمَ الْقِیٰمَةِ ؕ وَ لِلّٰهِ مِیْرَاثُ السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضِ ؕ وَ اللّٰهُ بِمَا تَعْمَلُوْنَ خَبِیْرٌ۠۱۸۰
আর আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে যা তোমাদেরকে দিয়েছেন তাতে যারা কৃপণতা করে তারা যেন কিছুতেই মনে না করে যে, এটা তাদের জন্য মঙ্গল। না, এটা তাদের জন্য অমঙ্গল। যে সম্পদে তারা কৃপণতা করেছে কিয়ামতের দিন তা-ই তাদের গলায় বেড়ি হবে। আসমান ও যমীনের স্বত্ত্বাধিকার একমাত্র আল্লাহরই। তোমরা যা কর আল্লাহ তা বিশেষভাবে অবগত।
(সূরা আল ইমরান:১৮০)
তাউস (রঃ) বলেন যে, কিয়ামতের দিন সঞ্চিত মাল একটা বিরাট অজগর হয়ে মালদারের পিছনে ধাবিত হবে আর সে ওর থেকে পালাতে থাকবে। ঐ সময় সাপটি তার পিছনে ছুটবে ও বলতে থাকবেঃ “আমি তোমার সঞ্চিত ধন।” অতঃপর সাপটি তার যে অঙ্গকেই পাবে ওটাকেই কামড়িয়ে ধরবে। (ইবনে কাসির)
সহীহ মুসলিমে আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি তার মালের যাকাত আদায় করবে না, কিয়ামতের দিন তার মালকে আগুনের তক্তা বানানো হবে এবং তা দ্বারা তার পার্শ্বদেশে, কপালে ও পিঠে দাগ দেয়া হবে। পঞ্চাশ হাজার বছর ধরে লোকদের ফায়সালা না হওয়া পর্যন্ত তার এ অবস্থা থাকবে। অতঃপর তাকে তার মনযিলের পথ দেখানো হবে, হয় জাহান্নামের পথ না হয় জান্নাতের পথ।” তাতে সম্পূর্ণ হাদীসটি বর্ণনা করা হয়েছে।
হাদীস শরীফে এসেছে-‘যাকে আল্লাহ সম্পদ দিয়েছেন, কিন্তু সে তার যাকাত দেয়নি কিয়ামতের দিন তা বিষধর স্বর্পরূপে উপস্থিত হবে এবং তা তার গলায় পেঁচিয়ে দেওয়া হবে। সাপটি তার উভয় অধরপ্রান্তে দংশন করবে এবং বলবে, আমিই তোমার ঐ ধন, আমিই তোমরা পুঞ্জিভূত সম্পদ।’ -সহীহ বুখারী
عَنْ خَالِدِ بْنِ أَسْلَمَ قَالَ خَرَجْنَا مَعَ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ رضى الله عنهما فَقَالَ أَعْرَابِىٌّ أَخْبِرْنِيْ قَوْلَ اللهِ (وَالَّذِيْنَ يَكْنِزُوْنَ الذَّهَبَ وَالْفِضَّةَ وَلاَ يُنْفِقُوْنَهَا فِيْ سَبِيْلِ اللهِ) قَالَ ابْنُ عُمَرَ رضى الله عنهما مَنْ كَنَزَهَا فَلَمْ يُؤَدِّ زَكَاتَهَا فَوَيْلٌ لَهُ، إِنَّمَا كَانَ هَذَا قَبْلَ أَنْ تُنْزَلَ الزَّكَاةُ فَلَمَّا أُنْزِلَتْ جَعَلَهَا اللهُ طُهْرًا لِلأَمْوَالِ-
খালিদ ইবনু আসলাম (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা আব্দুল্লাহ ইবনু ওমর (রাঃ)-এর সাথে বের হলাম। তখন এক বেদুঈন বলল, আমাকে আল্লাহর বাণী- ‘যারা স্বর্ণ ও রৌপ্য পুঞ্জীভূত করে এবং তা আল্লাহর পথে ব্যয় করে না, তাদেরকে মর্মন্তুদ শাস্তির সংবাদ দাও’ (তওবা ৯/৩৪) এ সম্পর্কে বলুন। তখন ইবনু ওমর (রাঃ) বললেন, যে ব্যক্তি সম্পদ জমা করেছে এবং যাকাত আদায় করেনি তার জন্য ধ্বংস অনিবার্য। এই বিধান ছিল যাকাতের বিধান অবতীর্ণ হওয়ার পূর্বে। যখন যাকাতের বিধান অবতীর্ণ হল, তখন আল্লাহ তা‘আলা তাকে সম্পদের জন্য পবিত্রতার কারণ নির্ধারণ করলেন।[2]
যাকাত অস্বীকারকারী কাফির : যাকাত ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের একটি। আর ইসলামের কোন বিধানকে অস্বীকার করলে সে ইসলামের গন্ডি থেকে বের হয়ে কাফিরে পরিণত হবে। অতএব যদি কোন ব্যক্তি যাকাত আদায়ে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করে তাহলে সে কাফির বা মুরতাদের অন্তর্ভুক্ত হবে।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
فَإِنْ تَابُوْا وَأَقَامُوْا الصَّلَاةَ وَآتَوُا الزَّكَاةَ فَخَلُّوْا سَبِيْلَهُمْ إِنَّ اللهَ غَفُوْرٌ رَحِيْمٌ-
‘কিন্তু যদি তারা তওবা করে, ছালাত ক্বায়েম করে ও যাকাত আদায় করে তবে তাদের পথ ছেড়ে দিবে; নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু’ (তওবা ৯/৫)।
হাদীছে এসেছে,
عَنِ ابْنِ عُمَرَ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ أُمِرْتُ أَنْ أُقَاتِلَ النَّاسَ حَتَّى يَشْهَدُوْا أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُوْلُ اللهِ، وَيُقِيْمُوْا الصَّلاَةَ، وَيُؤْتُوْا الزَّكَاةَ، فَإِذَا فَعَلُوْا ذَلِكَ عَصَمُوْا مِنِّيْ دِمَاءَهُمْ وَأَمْوَالَهُمْ إِلاَّ بِحَقِّ الإِسْلاَمِ، وَحِسَابُهُمْ عَلَى اللهِ-
ইবনু ওমর (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘আমি লোকদের সাথে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার জন্য আদিষ্ট হয়েছি, যতক্ষণ না তারা সাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহ ব্যতীত প্রকৃত কোন উপাস্য নেই ও মুহাম্মাদ (ছাঃ) আল্লাহর রাসূল, আর ছালাত ক্বায়েম করে ও যাকাত আদায় করে। তারা যদি এগুলো করে, তবে আমার পক্ষ হতে তাদের জান ও মালের নিরাপত্তা লাভ করল; অবশ্য ইসলামের বিধান অনুযায়ী যদি কোন কারণ থাকে, তাহলে স্বতন্ত্র কথা। আর তাদের হিসাবের ভার আল্লাহর উপর ন্যাস্ত’।
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর মৃত্যুর পরে কুরাইশরা তাদের সম্পদের যাকাত আদায়ে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করলে আবু বকর (রাঃ) তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছিলেন।
হাদীছে এসেছে,
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رضى الله عنه قَالَ قَالَ أَبُوْ بَكْرٍ رضى الله عنه وَاللهِ لَوْ مَنَعُوْنِيْ عَنَاقًا كَانُوْا يُؤَدُّوْنَهَا إِلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم لَقَاتَلْتُهُمْ عَلَى مَنْعِهَا-
আবু হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আবু বকর (রাঃ) বলেছেন, ‘আল্লাহর কসম! যদি তারা একটি মেষ শাবক যাকাত দিতেও অস্বীকৃতি জানায় যা আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)-এর কাছে তারা দিত, তাহলে যাকাত না দেওয়ার কারণে তাদের বিরুদ্ধে আমি অবশ্যই যুদ্ধ করব’।
অন্য হাদীছে এসেছে,
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ لَمَّا تُوُفِّىَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَاسْتُخْلِفَ أَبُوْ بَكْرٍ بَعْدَهُ وَكَفَرَ مَنْ كَفَرَ مِنَ الْعَرَبِ قَالَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ لأَبِيْ بَكْرٍ كَيْفَ تُقَاتِلُ النَّاسَ وَقَدْ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أُمِرْتُ أَنْ أُقَاتِلَ النَّاسَ حَتَّى يَقُوْلُوْا لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ فَمَنْ قَالَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ فَقَدْ عَصَمَ مِنِّيْ مَالَهُ وَنَفْسَهُ إِلاَّ بِحَقِّهِ وَحِسَابُهُ عَلَى اللهِ فَقَالَ أَبُوْ بَكْرٍ وَاللهِ لأُقَاتِلَنَّ مَنْ فَرَّقَ بَيْنَ الصَّلاَةِ وَالزَّكَاةِ فَإِنَّ الزَّكَاةَ حَقُّ الْمَالِ وَاللهِ لَوْ مَنَعُوْنِيْ عِقَالاً كَانُوْا يُؤَدُّوْنَهُ إِلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم لَقَاتَلْتُهُمْ عَلَى مَنْعِهِ فَقَالَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ فَوَاللهِ مَا هُوَ إِلاَّ أَنْ رَأَيْتُ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ قَدْ شَرَحَ صَدْرَ أَبِيْ بَكْرٍ لِلْقِتَالِ فَعَرَفْتُ أَنَّهُ الْحَقُّ-
আবু হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর মৃত্যুর পরে যখন আবু বকর (রাঃ) খলীফা নির্বাচিত হলেন, তখন আরবদের কিছু লোক (যাকাত আদায়ে) অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করল। (আবু বকর (রাঃ) তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ঘোষণা দিলেন)। তখন ওমর (রাঃ) বললেন, আপনি কিভাবে লোকদের সাথে যুদ্ধ করবেন? কারণ রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, আমাকে লোকদের সাথে যুদ্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যতক্ষণ না তারা ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’-কে স্বীকার করে। আর যে ব্যক্তি তা স্বীকার করবে সে তার সম্পদ ও প্রাণ আমার হাত থেকে সংরক্ষিত করে নিবে। তবে ইসলামের অধিকার ব্যতীত। আর অন্য সবকিছুর হিসাব আল্লাহর কাছে রয়েছে। অতঃপর আবু বকর (রাঃ) বললেন, আল্লাহর শপথ! যে ব্যক্তি ছালাত ও যাকাতের মধ্যে পার্থক্য নির্দেশ করবে আমি তার সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হব। কারণ যাকাত হচ্ছে আল্লাহর সম্পদের হক। আল্লাহর শপথ! তারা যদি উটের গলার একটি রশিও দিতে অস্বীকার করে, যা তারা রাসূল (ছাঃ)-এর যামানায় দিত, তাহলে এ অস্বীকৃতির কারণে আমি তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব। ওমর (রাঃ) বললেন, আল্লাহর শপথ! আমি দেখলাম আল্লাহ আবু বকর (রাঃ)-এর হৃদয়কে যুদ্ধের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছেন। কাজেই আমি বুঝতে পারলাম, আবু বকর (রাঃ)-এর সিদ্ধান্তই সঠিক ছিল। বুখারী হা/১৪০০,
# যাকাত বণ্টনের খাত ৮ টি:
মহান আল্লাহ তা‘আলা পবিত্র কুরআন মাজীদে যাকাত প্রদানের ৮টি খাত উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন,
إِنَّمَا الصَّدَقَاتُ لِلْفُقَرَاءِ وَالْمَسَاكِيْنِ وَالْعَامِلِيْنَ عَلَيْهَا وَالْمُؤَلَّفَةِ قُلُوْبُهُمْ وَفِيْ الرِّقَابِ وَالْغَارِمِيْنَ وَفِيْ سَبِيْلِ اللهِ وَابْنِ السَّبِيْلِ فَرِيْضَةً مِّنَ اللهِ وَاللهُ عَلِيْمٌ حَكِيْمٌ-
নিশ্চয়ই ছাদাক্বাহ্ (যাকাত) হচ্ছে ফকীর ও মিসকীনদের জন্য এবং এতে নিয়োজিত কর্মচারীদের জন্য, আর যাদের অন্তর আকৃষ্ট করতে হয় তাদের জন্য; (তা বণ্টন করা যায়) দাস আযাদ করার ক্ষেত্রে, ঋণগ্রস্তদের মধ্যে, আল্লাহর রাস্তায় এবং মুসাফিরদের মধ্যে। এটি আল্লাহর পক্ষ হতে নির্ধারিত, আর আল্লাহ মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়’ (তওবা ৯/৬০)।
উক্ত আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা যাকাত প্রদানের ৮টি খাত উল্লেখ করেছেন। নিম্নে প্রত্যেকটি খাত আলাদাভাবে আলোচনা করা হল-
(১) ফকীর : নিঃসম্বল ভিক্ষাপ্রার্থী। যাকে আল্লাহ তা‘আলা যাকাতের ৮টি খাতের প্রথমেই উল্লেখ করেছেন। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) প্রতিনিয়ত দারিদ্র্য থেকে আল্লাহর নিকটে আশ্রয় প্রার্থনা করতেন। তিনি বলতেন, اللَّهُمَّ إِنِّيْ أَعُوْذُ بِكَ مِنَ الْكُفْرِ وَالْفَقْرِ ‘ হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট কুফরী ও দারিদ্র্য থেকে আশ্রয় চাচ্ছি’।[1] অতএব ফকীর যাকাতের মাল পাওয়ার হকদার। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
إِنْ تُبْدُوْا الصَّدَقَاتِ فَنِعِمَّا هِيَ وَإِنْ تُخْفُوْهَا وَتُؤْتُوْهَا الْفُقَرَاءَ فَهُوَ خَيْرٌ لَكُمْ-
তোমরা যদি প্রকাশ্যে ছাদাক্বাহ প্রদান কর তবে উহা ভাল; আর যদি তা গোপনে কর এবং দরিদ্রদেরকে দাও তা তোমাদের জন্য আরো ভাল’ (বাক্বারাহ ২/২৭১)।
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,
أَنَّ اللهَ افْتَرَضَ عَلَيْهِمْ صَدَقَةً فِيْ أَمْوَالِهِمْ، تُؤْخَذُ مِنْ أَغْنِيَائِهِمْ وَتُرَدُّ عَلَى فُقَرَائِهِمْ-
আল্লাহ তা‘আলা তাদের উপর তাদের সম্পদে ছাদাক্বাহ্ (যাকাত) ফরয করেছেন। যেটা তাদের ধনীদের নিকট থেকে গৃহীত হবে আর তাদের দরিদ্রের মাঝে বণ্টন হবে’।[2]
(২) মিসকীন : যাকাত প্রদানের ৮টি খাতের মধ্যে দ্বিতীয় খাত হিসাবে আল্লাহ তা‘আলা মিসকীনকে উল্লেখ করেছেন। আর মিসকীন হল ঐ ব্যক্তি যে নিজের প্রয়োজন মিটাতেও পারে না, মুখ ফুটে চাইতেও পারে না। বাহ্যিকভাবে তাকে সচ্ছল বলেই মনে হয়। হাদীছে এসেছে,
حدثنا قتيبة بن سعيد، حدثنا المغيرة، - يعني الحزامي - عن أبي الزناد، عن الأعرج، عن أبي هريرة، أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال " ليس المسكين بهذا الطواف الذي يطوف على الناس فترده اللقمة واللقمتان والتمرة والتمرتان " . قالوا فما المسكين يا رسول الله قال " الذي لا يجد غنى يغنيه ولا يفطن له فيتصدق عليه ولا يسأل الناس شيئا "
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত: রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ “যারা মানুষের দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করে বেড়ায় এবং দু’ এক গ্রাস খাবার বা দু’ একটা খেজুর ভিক্ষা নিয়ে ফিরে যায় তারা (প্রকৃত) মিসকীন নয়। এ কথা শুনে সাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহ্র রসূল! তাহলে মিসকীন কে? (উত্তরে) তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, মানবীয় মৌলিক প্রয়োজন মিটানোর মত সামর্থ্য যার নেই আর সমাজের মানুষও তাকে অভাবী বলে জানে না যাতে তাকে দান করতে পারে এবং সে নিজেও (মুখ খুলে) কারো কাছে কিছু চায় না।” (এ ব্যক্তি হলো প্রকৃত মিসকীন অর্থাৎ আর্থিক অনটনভুক্ত গরীব ভদ্রলোক)। (ই.ফা. ২২৬২, ই.সে. ২২৬২)
সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ২২৮৩
(৩) যাকাত আদায়কারী ও হেফাযতকারী : আল্লাহ তা‘আলা যাকাত প্রদানের তৃতীয় খাত হিসাবে ঐ ব্যক্তিকে উল্লেখ করেছেন, যে ব্যক্তি যাকাত আদায়, হেফাযত ও বণ্টনের কাজে নিয়োজিত। অতএব উক্ত ব্যক্তি সম্পদশালী হলেও সে চাইলে যাকাতের অংশ গ্রহণ করতে পারবে।[4]
হাদীছে এসেছে,
عَنِ ابْنِ السَّاعِدِىِّ الْمَالِكِىِّ أَنَّهُ قَالَ اسْتَعْمَلَنِيْ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ رضى الله عنه عَلَى الصَّدَقَةِ فَلَمَّا فَرَغْتُ مِنْهَا وَأَدَّيْتُهَا إِلَيْهِ أَمَرَ لِيْ بِعُمَالَةٍ فَقُلْتُ إِنَّمَا عَمِلْتُ لِلَّهِ وَأَجْرِى عَلَى اللهِ، فَقَالَ خُذْ مَا أُعْطِيْتَ فَإِنِّيْ عَمِلْتُ عَلَى عَهْدِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَعَمَّلَنِيْ فَقُلْتُ مِثْلَ قَوْلِكَ فَقَالَ لِيْ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا أُعْطِيْتَ شَيْئًا مِنْ غَيْرِ أَنْ تَسْأَلَ فَكُلْ وَتَصَدَّقْ-
ইবনু সায়ে‘দী আল-মালেকী (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, ওমর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) আমাকে যাকাত আদায়কারী হিসাবে নিযুক্ত করলেন। যখন আমি কাজ শেষ করলাম এবং তাঁর কাছে পৌঁছিয়ে দিলাম তখন তিনি নির্দেশ দিলেন আমাকে পারিশ্রমিক দেওয়ার জন্য। আমি বললাম, আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্যই আমি ইহা করেছি। সুতরাং আমি আল্লাহর নিকট থেকেই এর প্রতিদান নেব। তিনি বললেন, আমি যা দিচ্ছি তা নিয়ে নাও। কেননা আমিও রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর সময় যাকাত আদায়কারীর কাজ করেছি। তখন তিনিও আমাকে পারিশ্রমিক প্রদানের নির্দেশ দিয়েছিলেন। তখন আমিও তোমার মত এরূপ কথা বলেছিলাম। রাসূল (ছাঃ) আমাকে বলেছিলেন, যখন তুমি না চাওয়া সত্ত্বেও তোমাকে কিছু দেওয়া হয়, তখন তুমি তা গ্রহণ কর। তুমি তা নিজে খাও অথবা ছাদাক্বাহ্ কর।[5]
অন্য হাদীছে এসেছে,
عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ لاَ تَحِلُّ الصَّدَقَةُ لِغَنِىٍّ إِلاَّ لِخَمْسَةٍ لِغَازٍ فِيْ سَبِيْلِ اللهِ أَوْ لِعَامِلٍ عَلَيْهَا أَوْ لِغَارِمٍ أَوْ لِرَجُلٍ اشْتَرَاهَا بِمَالِهِ أَوْ لِرَجُلٍ كَانَ لَهُ جَارٌ مِسْكِيْنٌ فَتُصُدِّقَ عَلَى الْمِسْكِيْنِ فَأَهْدَاهَا الْمِسْكِيْنُ لِلْغَنِىِّ
আতা ইবনু ইয়াসার (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, সম্পদশালী ব্যক্তির জন্য যাকাত গ্রহণ হালাল নয়। তবে পাঁচ শ্রেণীর ধনীর জন্য তা জায়েয। (১) আল্লাহর পথে জিহাদরত ব্যক্তি। (২) যাকাত আদায়ে নিয়োজিত কর্মচারী। (৩) ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি। (৪) যে ব্যক্তি যাকাতের মাল নিজ মাল দ্বারা ক্রয় করেছে এবং (৫) মিসকীন প্রতিবেশী তার প্রাপ্ত যাকাত থেকে ধনী ব্যক্তিকে উপঢৌকন দিয়েছে।[6]
(৪) ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট করার জন্য কোন অমুসলিমকে যাকাত প্রদান করা : ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে অথবা কোন অনিষ্ট বা কাফেরের ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়ার লক্ষ্যে কোন অমুসলিমকে যাকাতের অর্থ প্রদান করা যায়।[7]
হাদীছে এসেছে,
عَنْ أَبِيْ سَعِيْدٍ الْخُدْرِىِّ قَالَ بَعَثَ عَلِىٌّ رضى الله عنه وَهُوَ بِالْيَمَنِ بِذَهَبَةٍ فِيْ تُرْبَتِهَا إِلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَسَمَهَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم بَيْنَ أَرْبَعَةِ نَفَرٍ الأَقْرَعُ بْنُ حَابِسٍ الْحَنْظَلِىُّ وَعُيَيْنَةُ بْنُ بَدْرٍ الْفَزَارِىُّ وَعَلْقَمَةُ بْنُ عُلاَثَةَ الْعَامِرِىُّ ثُمَّ أَحَدُ بَنِيْ كِلاَبٍ وَزَيْدُ الْخَيْرِ الطَّائِىُّ ثُمَّ أَحَدُ بَنِيْ نَبْهَانَ قَالَ فَغَضِبَتْ قُرَيْشٌ فَقَالُوْا أَتُعْطِى صَنَادِيْدَ نَجْدٍ وَتَدَعُنَا فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِنِّيْ إِنَّمَا فَعَلْتُ ذَلِكَ لأَتَأَلَّفَهُمْ فَجَاءَ رَجُلٌ كَثُّ اللِّحْيَةِ مُشْرِفُ الْوَجْنَتَيْنِ غَائِرُ الْعَيْنَيْنِ نَاتِئُ الْجَبِيْنِ مَحْلُوْقُ الرَّأْسِ فَقَالَ اتَّقِ اللهَ يَا مُحَمَّدُ قَالَ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَمَنْ يُطِعِ اللهَ إِنْ عَصَيْتُهُ أَيَأْمَنُنِيْ عَلَى أَهْلِ الأَرْضِ وَلاَ تَأْمَنُوْنِيْ قَالَ ثُمَّ أَدْبَرَ الرَّجُلُ فَاسْتَأْذَنَ رَجُلٌ مِنَ الْقَوْمِ فِيْ قَتْلِهِ يُرَوْنَ أَنَّهُ خَالِدُ بْنُ الْوَلِيْدِ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِنَّ مِنْ ضِئْضِئِ هَذَا قَوْمًا يَقْرَءُوْنَ الْقُرْآنَ لاَ يُجَاوِزُ حَنَاجِرَهُمْ يَقْتُلُوْنَ أَهْلَ الإِسْلاَمِ وَيَدَعُوْنَ أَهْلَ الأَوْثَانِ يَمْرُقُوْنَ مِنَ الإِسْلاَمِ كَمَا يَمْرُقُ السَّهْمُ مِنَ الرَّمِيَّةِ لَئِنْ أَدْرَكْتُهُمْ لأَقْتُلَنَّهُمْ قَتْلَ عَادٍ-
আবু সা‘ঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আলী (রাঃ) নবী (ছাঃ)-এর নিকট কিছু স্বর্ণের টুকরো পাঠালেন। তিনি তা চার ব্যক্তির মাঝে বণ্টন করে দিলেন। (১) আল-আকরা ইবনু হানযালী যিনি মাজায়েশী গোত্রের লোক ছিলেন। (২) উআইনা ইবনু বাদার ফাযারী। (৩) যায়েদ ত্বায়ী, যিনি পরে বনী নাবহান গোত্রের ছিলেন। (৪) আলকামাহ ইবনু উলাছাহ আমেরী, যিনি বনী কিলাব গোত্রের ছিলেন। এতে কুরাইশ ও আনসারগণ অসন্তুষ্ট হলেন এবং বলতে লাগলেন, নবী (ছাঃ) নজদবাসী নেতৃবৃন্দকে দিচ্ছেন আর আমাদেরকে দিচ্ছেন না। তখন নবী (ছাঃ) বললেন, আমি তো তাদেরকে আকৃষ্ট করার জন্য এমন মনরঞ্জন করছি। তখন এক ব্যক্তি সামনে এগিয়ে আসল, যার চোখ দু’টি কোটরাগত, গন্ডদ্বয় ঝুলে পড়া, কপাল উঁচু, ঘন দাড়ি এবং মাথা মোড়ানো ছিল। সে বলল, হে মুহাম্মাদ! আল্লাহকে ভয় করুন। তখন তিনি বললেন, আমিই যদি নাফরমানী করি তাহলে আল্লাহর আনুগত্য করবে কে? আল্লাহ আমাকে পৃথিবীবাসীর উপর আমানতদার বানিয়েছেন, আর তোমরা আমাকে আমানতদার মনে করছ না। তখন এক ব্যক্তি তাঁর নিকট তাকে হত্যা করার অনুমতি চাইল। (আবু সা‘ঈদ (রাঃ) বলেন, আমি তাকে খালিদ ইবনু ওয়ালিদ বলে ধারণা করছি। কিন্তু নবী (ছাঃ) তাকে নিষেধ করলেন। অতঃপর যখন অভিযোগকারী লোকটি ফিরে গেল, তখন নবী (ছাঃ) বললেন, এ ব্যক্তির বংশ হতে বা এ ব্যক্তির পরে এমন কিছু সংখ্যক লোক হবে তারা কুরআন পড়বে, কিন্তু তা তাদের কণ্ঠনালী অতিক্রম করবে না। দ্বীন হতে তারা এমনভাবে বের হয়ে যাবে যেমনি ধনুক হতে তীর বেরিয়ে যায়। তারা ইসলামের অনুসারীদেরকে হত্যা করবে আর মুর্তি পূজারীদেরকে হত্যা করা থেকে বিরত থাকবে। আমি যদি তাদেরকে পেতাম তাহলে তাদেরকে আদ জাতির মত অবশ্যই হত্যা করতাম।[8]
(৫) দাস মুক্তির জন্য : যারা লিখিত কোন চুক্তির বিনিময়ে দাসে পরিণত হয়েছে। তাদেরকে মালিকের নিকট থেকে ক্রয়ের মাধ্যমে মুক্ত করার লক্ষ্যে যাকাতের অর্থ প্রদান করা যায়। অনুরূপভাবে বর্তমানে কোন মুসলিম ব্যক্তি অমুসলিমদের হাতে বন্দি হলে সে ব্যক্তিও এই খাতের অন্তর্ভুক্ত হবে।[9]
হাদীছে এসেছে,
عَنِ الْبَرَاءِ قَالَ جَاءَ رَجُلٌ إِلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ دُلَّنِيْ عَلَى عَمَلٍ يُقَرِّبُنِيْ مِنَ الْجَنَّةِ وَيُبَاعِدُنِيْ مِنَ النَّارِ قَالَ لَئِنْ كُنْتَ أَقْصَرْتَ الْخُطْبَةَ لَقَدْ أَعْرَضْتَ الْمَسْأَلَةَ أَعْتِقِ النَّسَمَةَ وَفُكَّ الرَّقَبَةَ قَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَوَلَيْسَا وَاحِدًا قَالَ لاَ عِتْقُ النَّسَمَةِ أَنْ تُفْرِدَ بِعِتْقِهَا وَفَكُّ الرَّقَبَةِ أَنْ تُعِيْنَ فِيْ ثَمَنِهَا وَالْمِنْحَةُ الْوَكُوْفُ وَالْفَىْءُ عَلَى ذِى الرَّحِمِ الظَّالِمِ فَإِنْ لَمْ تُطِقْ ذَلِكَ فَكُفَّ لِسَانَكَ إِلاَّ مِنْ خَيْرٍ-
বারা ইবনু আযেব (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর নিকট এসে বলল, আমাকে এমন একটি আমল বলে দিন যা আমাকে জান্নাতের নিকটবর্তী করবে এবং জাহান্নাম থেকে দূরে রাখবে। রাসূল (ছাঃ) বললেন, প্রশ্ন তো তুমি অল্প কথায় বলে ফেললে; কিন্তু তুমি অত্যন্ত ব্যাপক বিষয় জানতে চেয়েছ। তুমি একটি প্রাণী আযাদ করে দাও এবং একটি দাস মুক্ত করে দাও। লোকটি বলল, এ উভয়টি কি একই কাজ নয়? তিনি বললেন, না (উভয়টি এক নয়)। কেননা একটি প্রাণী আযাদ করার মানে হল, তুমি একাকী গোটা প্রাণীকে মুক্ত করে দিবে। আর একটি দাস মুক্ত করার অর্থ হল, তার মুক্তির জন্য কিছু মূল্য প্রাদানের মাধ্যমে সাহায্য করবে। (এদ্ভিন্ন জান্নাতে প্রবেশকারী কাজের মধ্যে অন্যতম হল) প্রচুর দুধ প্রদানকারী জানোয়ার দান করা এবং এমন নিকটতম আত্নীয়ের প্রতি অনুগ্রহ করা, যে তোমার উপর অত্যাচারী। যদি তুমি এ সমস্ত কাজ করতে সক্ষম না হও, ক্ষুদার্থকে খাদ্য দান কর এবং পিপাসিতকে পানি পান করাও। সৎ কাজের আদেশ এবং অসৎ কাজ হতে নিষেধ কর। আর যদি তোমার দ্বারা এ কাজ করাও সম্ভব না হয়, তবে কল্যাণকর কথা ব্যতীত অন্য কথা থেকে তোমার জিহবাকে সংযত রাখ।[10]
উল্লিখিত হাদীছে ইসলাম দাসমুক্তিকে জান্নাত লাভের বিশেষ মাধ্যম হিসাবে উল্লেখ করেছে। আর দাসমুক্তির জন্য যেহেতু প
Click here to claim your Sponsored Listing.
Videos (show all)
Category
Contact the school
Website
Address
Mirpur
1216
149, Shah Ali Bagh, Mirpur/1
Mirpur, 1216
Dhaka SDA Church Children Ministry Children Sabbath School Programs.
Mirpur, 1216
QuesHUB is an online Educational Platform in Bangladesh developed by QuesHUB LLC.
Mirpur Cantonment Public School &College , Mirpur Cantonment/Dhaka
Mirpur, 1216
Official Page of MCPQC (MIRPUR CANTONMENT PUBLIC QUIZ CLUB)
Bilal Uddin Mention Plot No-16 Road No-01 Level/5 Senpara Parbata Mirpur Circle/10
Mirpur, DHAKA1216
Adventure Education & Immigration Consultant is one of the leading Educational Service Providers of the country . We also provide Overseas Education and Immigration Consulting Serv...
Senpara Parvata
Mirpur, 1216
Learn Data Skills for Future!! Data Science Era is an online educational platform that provides liv
156, Senpara Parbata
Mirpur, 1216
e-Shikhi is an online learning platform in Bangladesh.e-Shikhi offers various courses such like acad