Prothoma Prokashan

সারা বছর সেরা বই

২০০৯ সালে যাত্রা শুরু করে প্রথমা প্রকাশন বাংলাদেশের একটি শীর্ষ প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান। সাত শতাধিক সুনির্বাচিত, সুসম্পাদিত আর ভালো ছাপা ও বাঁধাইয়ের বই প্রকাশ করে পাঠকের আস্থা অর্জন করেছে। বাঙলা ভাষার শ্রেষ্ঠ লেখকদের ইতিহাস, গবেষণা, মুক্তিযুদ্ধ, অর্থনীতি ও সৃজনশীল বইয়ের নির্ভরযোগ্য নাম প্রথমা।

19/11/2023
19/11/2023

নানা কারণে একাত্তরের যুদ্ধ অনিবার্য হয়ে উঠেছিল। একদিকে ছিল একটি জনগোষ্ঠীর কোটি কোটি মানুষের আকাঙ্ক্ষা। অন্যদিকে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পরাশক্তিগুলোর বহুমাত্রিক দ্বন্দ্ব ও সমীকরণ। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ এর গন্তব্যে পৌঁছেছে। একাত্তরের এই গতিধারা ও ইতিহাসের খুব অল্পই এখন পর্যন্ত জানা গেছে। একাত্তরের যুদ্ধ শুধু ঢাকা আর ইসলামাবাদের মধ্যে আটকে ছিল না। বাংলাদেশকে নিয়ে বিবদমান পরাশক্তিগুলোর মধ্যে হয়েছিল ছায়াযুদ্ধ। অনেক দৌড়ঝাঁপ হয়েছে কলকাতা, দিল্লি, ওয়াশিংটন, মস্কো আর বেইজিংয়ে। কূটনৈতিক লড়াই হয়েছে জাতিসংঘে। এর একটি বড় অনুষঙ্গ ছিল প্রচারযুদ্ধ। সব ছাপিয়ে উঠে এসেছে ভারতের ভূমিকা। অনেক ঐতিহাসিক দলিলের সূত্র ধরে লেখা এ বই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের বাকমুক্তির প্রক্রিয়ায় এক অনন্য সংযোজন, যা পাঠকের কৌতূহল বাড়িয়ে তুলবে।
বাংলার মানুষের উদারতার সুযোগ নিয়ে সারা বাংলাদেশকে লুট করা হয়েছে। যাঁদের ৫ লাখ টাকা ছিল, তাঁরা এখন ৫ কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। - শেখ মুজিবুর রহমান শেখ মুজিবুর রহমান কৌশলে এমন পরিস্থিতি তৈরি করতে চেয়েছিলেন, যার ফলে পাকিস্তানের দুই অংশ সাংবিধানিক ও আইনি পদ্ধতিতে আলাদা হয়ে যায়। - জুলফিকার আলী ভুট্টো ভুট্টো আর মুজিব উভয়েই অখণ্ড পাকিস্তানের বদলে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্র চেয়েছেন।- ইয়াহিয়া খান
পূর্ব বাংলা পাকিস্তানের অংশ থাকুক, এ ব্যাপারে আমরা কোনো চাপ দিইনি। বিরাজমান প্রক্রিয়াগুলো চালু রাখতে দিলে ১৯৭২ সালের বসন্তের মধ্যেই বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হবে। - হেনরি কিসিঞ্জার
বাংলাদেশের লড়াই আজ ভারতের লড়াই। এটা আমাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। যুদ্ধে নামা ছাড়া আমাদের সামনে আর কোনো পথ খোলা নেই। - ইন্দিরা গান্ধী

18/11/2023

আপনার সংগ্রহে যদি ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর লেখা চিঠি থাকে তাহলে পাঠিয়ে দিন এই ঠিকানায়
প্রথমা প্রকাশন, ১৯ কারওয়ান বাজার, ঢাকা ১২১৫।

17/11/2023

ইশক নে গালিব নিকম্মা কর দিয়া
বরনা হাম ভি আদমি থে কাম কে

মির্জা গালিবের গজলের ৭ম মুদ্রণ বাজারে
উর্দু ও ফারসি থেকে ভাষান্তর: জাভেদ হুসেন

17/11/2023

৬ষ্ঠ মুদ্রণ বাজারে
হাইকমিশনার সমর সেনকে জিম্মি করার জন্য জাসদ-সৃষ্ট বিপ্লবী গণবাহিনীর জয়জন তরুণ পঁচাত্তরের ২৬ নভেম্বর ঢাকার ভারতীয় দূতাবাসে অভিযান চালান। এটি ব্যর্থ হয়, নিহত হন চার তরুণ। ইতিহাসের টালমাটাল এই পর্বের রোমাঞ্চকর বিবরণ আছে এ বইয়ে। সেই সঙ্গে উঠে এসেছে কয়েক স্বপ্নবান তরুণের জীবনের গল্প।

16/11/2023

৭ম মুদ্রণে মহিউদ্দিন আহমদের পার্বত্য চট্টগ্রাম
পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙালি জাতীয়তাবাদের বিপরীতে জন্ম নিয়েছে জুম্ম জাতীয়তাবাদ। ফলে বিরোধ তৈরি হয়ে একসময় গেছে তা সশস্ত্র ধারায়। ঝরেছে অনেক রক্ত। সঙ্গে যুক্ত হয়েছে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও জেনারেল আবুল মনজুরের বিয়োগান্ত উপাখ্যান আর জুমপাহাড়ের রাজনীতির ভাঙাগড়ার কাহিনি। অনুসন্ধানী গবেষক মহিউদ্দিন আহমদ এ বইয়ে তুলে ধরেছেন তার পূর্বাপর।

14/11/2023

৭ম মুদ্রণ বাজারে
মির্জা গালিবের গজল
উর্দু ও ফারসি থেকে ভাষান্তর: জাভেদ হুসেন

13/11/2023

আওয়ার ডেট টু দ্য ফোর প্রফেসরস
এস নজরুল ইসলাম
প্রথমা প্রকাশন, প্রথম মুদ্রণ: সেপ্টেম্বর, ২০২৩

মুক্তিযুদ্ধ, চার অধ্যাপক এবং আমাদের সময়
আওয়ার ডেট টু দ্য ফোর প্রফেসরস বইয়ের মাধ্যমে লেখক এস নজরুল ইসলাম নতুন প্রজন্মকে বাংলাদেশের ইতিহাস ভিন্নভাবে পড়ার ও জানার একটি সুযোগ করে দিলেন।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা-পূর্ব ও স্বাধীনতার অব্যবহিত পরবর্তী সময়কে নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ লেখা হয়েছে। এই বিপুল প্রয়াসের মধ্যে সদ্য প্রকাশিত আওয়ার ডেট টু দ্য ফোর প্রফেসরস একটি ব্যতিক্রমী সংযোজন।

বইটির লেখক এস নজরুল ইসলাম নিজে একজন প্রথিতযশা অর্থনীতিবিদ। তিনি ভিন্নতর কাঠামোর মাধ্যমে ইতিহাসের এ গুরুত্বপূর্ণ কালপর্বকে হাজির করেছেন তুলনামূলক কাঠামোর আঙ্গিকে। আর কাঠামোটি লেখক বেছে নিয়েছেন বাংলাদেশের সে কালপর্বে অনন্যসাধারণ ভূমিকা রেখেছেন, এমন চারজন প্রথিতযশা অর্থনীতিবিদের উন্নয়নচিন্তা ও অবদানের নিরিখে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বাধীন স্বাধীনতাসংগ্রাম এবং স্বাধীন বাংলাদেশে তাঁর পরিচালনাধীন সরকারের জাতি গঠন ও দেশ বিনির্মাণের প্রয়াসে বাংলাদেশের অর্থনীতিবিদেরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তাঁদের মধ্যে যে চারজনের অবদান বহুলভাবে স্বীকৃত, তাঁরা হলেন অধ্যাপক নুরুল ইসলাম, অধ্যাপক মোশাররফ হোসেন, অধ্যাপক আনিসুর রহমান ও অধ্যাপক রেহমান সোবহান।
বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রাম এই চার অর্থনীতিবিদকে গভীরভাবে আন্দোলিত করেছিল। তাঁরা সক্রিয় রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন না। কিন্তু এই সংগ্রাম একাডেমিক জগতের পরিসরকে অতিক্রম করে তাঁদের উদ্বুদ্ধ করেছিল রাজনৈতিক আন্দোলনের ঝুঁকি ও স্বপ্নের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে। তাঁরা তাঁদের জ্ঞান ও মেধাকে উৎসর্গ করেছিলেন বাঙালি জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের স্বার্থে এবং পরে দেশ গঠনের প্রত্যয়ে।

সম্ভাব্য তরুণ পাঠকদের এ গ্রন্থে আলোচিত অনেক ঘটনার সময়ে জন্ম হয়নি। বাংলাদেশের ইতিহাসের তাৎপর্যপূর্ণ এসব পর্ব সম্পর্কে বস্তুনিষ্ঠ ধারণা পাওয়ার আগ্রহ তাঁদের থাকার কথা। অন্যদিকে অনেকে এই চার অর্থনীতিবিদের গবেষণা, আত্মজীবনীমূলক বই, সাক্ষাৎকার ও কলাম পড়ে তাঁদের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন।

এই দুই ধরনের পাঠকের জন্য এই বইয়ে লেখক নজরুল ইসলাম একটি ব্যতিক্রমী বৈশিষ্ট্য ও বিরল কৃতিত্ব দেখিয়েছেন। প্রথমবারের মতো তিনি এই কীর্তিমান চার অর্থনীতিবিদের অবদানকে বিশদ বিশ্লেষণসহ এক জায়গায় জড়ো করেছেন। তাঁদের গড়ে ওঠা, শিক্ষা অর্জন ও প্রস্তুতি পর্বের আলোকে পরবর্তী জীবনের কর্মকাণ্ড ও জাতীয় জীবনে তাঁদের ভূমিকাকে বুঝতে সচেষ্ট হয়েছেন। তাঁদের অর্থনৈতিক ভাবনা, উন্নয়ন-দর্শন, রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি ও তাঁদের অবদান উপস্থাপন করেছেন বিভিন্ন প্রসঙ্গে তাঁদের তুলনামূলক অবস্থান তুলে ধরে। বিভিন্ন বিষয়ে তাঁদের মতভিন্নতার দিকেও আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

মধ্যষাটের দশকে উদীয়মান উন্নয়ন অর্থনীতির তত্ত্বে ‘উন্নয়ন’-এর ধারণাকে চার অর্থনীতিবিদ কীভাবে বুঝেছেন, তার সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগও পাবেন পাঠক।

তাঁর ‘ঋণ স্বীকার’
বইটি যখন প্রকাশিত হলো তখন অধ্যাপক নুরুল ইসলাম ও অধ্যাপক মোশাররফ হোসেন আর আমাদের মাঝে নেই। আমাদের সৌভাগ্য যে অধ্যাপক আনিসুর রহমান ও অধ্যাপক রেহমান সোবহান এখনো জীবিত। বইয়ের ভূমিকায় নজরুল ইসলাম লিখেছেন যে এই প্রকাশনা চার অর্থনীতিবিদের প্রতি তাঁর ‘ঋণ স্বীকার’। বইয়ের শিরোনামেও তা প্রতিফলিত হয়েছে। যোগ্য ব্যক্তিদের জীবিত অবস্থায় ঋণ স্বীকার খুব একটা দেখা যায় না। এই গ্রন্থ তাঁদের সবার প্রতি শ্রদ্ধার নিদর্শন।

বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধের সূচনাপূর্ব যুগসন্ধিক্ষণে বঙ্গবন্ধু একটি জাতিকে স্বাধীনতার জন্য প্রস্তুত করছিলেন। সেই রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় এই চার অর্থনীতিবিদ ‘দুই অর্থনীতি তত্ত্ব’-এর মাধ্যমে পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালি জনমানুষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশকে দিয়েছিলেন যুক্তিনির্ভরতা। বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক সংগ্রামের অর্থনৈতিক কার্যকারণ মজবুত করার মাধ্যমে তাঁর দাবির যথার্থতাকে শাণিত করেছিলেন তাঁরা।

চার অর্থনীতিবিদ এ ক্ষেত্রে যে অবদান রেখেছিলেন, এখন পর্যন্ত তার সবচেয়ে বিশদ বিশ্লেষণ এই বইয়ে হাজির করেছেন নজরুল ইসলাম। তৎকালীন বিকাশমান রাজনৈতিক আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে আর্থসামাজিক বিভিন্ন বিষয় যেভাবে রাজনৈতিক আন্দোলনকে প্রভাবিত করেছিল, তাতে প্রভাবক হিসেবে চার অর্থনীতিবিদের ভূমিকা বিষয়ে এমন তুলনামূলক উপস্থাপন এই বইয়ের একটি বাড়তি আকর্ষণ।

মেধা নিযুক্ত হয়েছিল রাজনৈতিক আন্দোলনে
মুক্তিযুদ্ধের বিশাল পটভূমিতে স্বাধিকার আন্দোলন কীভাবে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ডাকে পরিণতি ও পূর্ণতা পেল, সে ইতিহাস তুলে এনেছেন নজরুল ইসলাম। লেখক যথার্থভাবেই বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের একটি বিশেষ দিকের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। তিনি দেখিয়েছেন যে নাগরিক সমাজের অন্য অনেকের সঙ্গে এই চার অর্থনীতিবিদের মেধাকে কী করে বঙ্গবন্ধু রাজনৈতিক আন্দোলন-সংগ্রামে নিযুক্ত করেছিলেন।

বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে অর্থনৈতিক ইস্যু নিয়ে সারসংক্ষেপ প্রস্তুত করে, ১৯৭০ সালে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়নে অবদান রেখে, ইংরেজি সাপ্তাহিক পত্রিকা ফোরাম প্রকাশের মাধ্যমে ‘দুই অর্থনীতি তত্ত্বের’ ও স্বাধিকার আন্দোলনের যৌক্তিকতার ব্যাপক প্রচার করে এবং পাকিস্তানের বিভিন্ন পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় প্রস্তাবিত বিনিয়োগ, সম্পদ বণ্টন ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ক্ষুরধার সমালোচনার মাধ্যমে এই চার অর্থনীতিবিদ বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বাধীন রাজনৈতিক আন্দোলনের অর্থনৈতিক ভিত্তিকে শক্তিশালী করেছেন।

চারজনই আন্দোলনে শামিল হয়েছেন, কখনো নিজস্ব অবস্থান থেকে, কখনোবা সম্মিলিতভাবে, আবার কখনো অন্যান্য অর্থনীতিবিদকে সঙ্গে নিয়ে (যেমন অধ্যাপক আজিজুর রহমান খান, স্বদেশ বসুসহ অন্যান্য বাঙালি অর্থনীতিবিদ)। এই চার অর্থনীতিবিদ কীভাবে ‘একাডেমিক অর্থনীতিবিদ’ থেকে ‘পাবলিক ইন্টেলেকচুয়ালে’ (জনবুদ্ধিজীবী) রূপান্তরিত হলেন, তা আজকের সময়ে এক গুরুত্বপূর্ণ নজির হাজির করেছে।

স্বাধীনতাযুদ্ধ ও পরবর্তীকাল
চার অর্থনীতিবিদই বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রগতিশীল ও প্রতিভাবান শিক্ষক হিসেবে ছিলেন ব্যাপকভাবে পরিচিত। ছাত্রছাত্রীদের অনেকেই তাঁদের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে রাজনৈতিক আন্দোলনে শামিল হয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুও তাঁদের অনুপ্রাণিত করেছিলেন বড় এক স্বপ্নের সঙ্গে যুক্ত হতে।

অধ্যাপক নুরুল ইসলাম, অধ্যাপক আনিসুর রহমান ও অধ্যাপক রেহমান সোবহানের স্মৃতিচারণামূলক লেখা থেকে লেখক উদ্ধৃত করেছেন। দেখিয়েছেন কীভাবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্বাধীনতাযুদ্ধের একেবারে প্রথম দিকে পরিবার-পরিজন রেখে ঢাকা ছেড়ে তাঁরা অনিশ্চিত ভবিষ্যৎকে আলিঙ্গন করেছেন। পাকিস্তানি সেনাদের দৃষ্টি এড়িয়ে, পাকিস্তান বিমানবাহিনীর বোমাবর্ষণ থেকে দৈবক্রমে জীবন বাঁচিয়ে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে গিয়ে অংশগ্রহণ করেছেন মুক্তিযুদ্ধে। তাঁদের কেউ ছিলেন প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রবাসী সরকারের পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য। কেউবা মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষে প্রচার-প্রচারণায়, ভ্রাম্যমাণ দূতের ভূমিকায় বাংলাদেশের পক্ষে আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ে এবং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত গঠনে ছিলেন সক্রিয়।

এ প্রকাশনার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ স্বাধীনতা-পরবর্তী সরকারের সময়ে প্রথম পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য হিসেবে এই চার অর্থনীতিবিদের উন্নয়ন-দর্শন, উদ্যোগ ও কর্মকাণ্ডের বিশদ বয়ান। পরিকল্পনা কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলেন স্বয়ং বঙ্গবন্ধু। স্বল্পতম সময়ে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছিলেন তাঁরা। স্বাধীন বাংলাদেশ নিয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন, অর্থনৈতিক পুনর্বাসন ও পুনর্নির্মাণ এবং দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে তাঁর দর্শন ও নানামুখী পদক্ষেপ—এসবের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত ছিলেন চার অর্থনীতিবিদ। এসব বিষয়ে তাঁদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা, যুক্তি, পরামর্শ করতেন বঙ্গবন্ধু।
সেসব প্রসঙ্গ ধরে বইটিতে উঠে এসেছে বাংলাদেশের তখনকার পরিপ্রেক্ষিতে সমাজতন্ত্রের ধারণা, জাতীয়করণ, আমদানি-প্রতিস্থাপন বনাম রপ্তানিমুখী উন্নয়ন, পরিকল্পনা বনাম বাজারের ভূমিকা, শ্রম বনাম পুঁজির প্রাধান্য ও বেসরকারি খাতের তুলনামূলক ভূমিকা, ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ইত্যাদি প্রসঙ্গ। ‘সমাজতন্ত্র’-এর ধারণাকে বঙ্গবন্ধু কীভাবে দেখেছেন, চার অর্থনীতিবিদ সমাজতন্ত্রকে কীভাবে সংজ্ঞায়িত করেছিলেন, মাঠপর্যায়ে সমাজতন্ত্রের বাস্তবায়ন বলতে তাঁরা কী বুঝেছেন—বাংলাদেশের গোড়ার ইতিহাসে সেসব আলোচনা আজকের সময়ে খুবই প্রাসঙ্গিক।

চার অর্থনীতিবিদ নিজেরা কী পরামর্শ বঙ্গবন্ধুকে দিয়েছেন, কোনটা তিনি গ্রহণ করেছেন, কোনটা করেননি, বঙ্গবন্ধুর দৃষ্টিভঙ্গিকে তাঁরা কতটুকু প্রভাবিত করতে সক্ষম হয়েছিলেন, কোন কোন বিষয়ে বঙ্গবন্ধু ছিলেন অনড়—এসব ইতিহাস তো দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক গোড়াপত্তনের সঙ্গে যুক্ত।

বিদ্যমান রাজনৈতিক পদ্ধতি পরিবর্তন করে বঙ্গবন্ধু কেন একদলীয় শাসনের দিকে গেলেন, জেলাভিত্তিক গভর্নর পদ্ধতি প্রচলনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু কীভাবে স্থানীয় সরকারব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে চেয়েছিলেন, সমবায়ী কৃষিব্যবস্থার প্রচলনের মাধ্যমে কীভাবে তিনি কৃষির উৎপাদন ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি ও আধুনিকায়নের পরিকল্পনা করেছিলেন—এসব বিষয়কে একটি কাঠামোর মধ্যে এনে লেখক বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক কৌশল এবং এসব বিষয়ে চার অর্থনীতিবিদের চিন্তাভাবনা ও দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করেছেন।

লেখকের মূল্যায়ন
বইটির লেখক নজরুল ইসলাম প্রথিতযশা একজন অর্থনীতিবিদ। তিনি শুধু ‘আমি তব মালঞ্চের হব মালাকার’-এর ভূমিকায় নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখবেন, তা প্রত্যাশিত নয়। এই বইয়ে তেমনটা হনওনি। চার অর্থনীতিবিদের দর্শন ও কর্মকাণ্ড উপস্থাপনের সঙ্গে তাঁর বিশ্লেষণী সত্তা এই বইয়ের অন্যতম প্রাপ্তি হবে পাঠকের জন্য।

প্রথম পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য হিসেবে চার অর্থনীতিবিদের দৃষ্টিভঙ্গিগত ও দর্শনগত মতপার্থক্য নিয়ে লিখতে গিয়ে অধ্যাপক রেহমান সোবহান তাঁর আত্মজীবনী আনট্রাঙ্কুয়েল রিকালেকশনস-এ লিখেছেন যে তাঁদের মধ্যে কেউ ছিলেন বাস্তববাদী, কেউ আদর্শবাদী। আর কারও অবস্থান ছিল মাঝামাঝি।

চার অর্থনীতিবিদের তুলনামূলক অবস্থান, মতপার্থক্য ও দৃষ্টিভঙ্গিগত ভিন্নতা নিয়ে লেখকের মন্তব্য ও পর্যবেক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নজরুল ইসলাম নিজে অবশ্য এই গ্রন্থে আলোচিত বেশ কিছু বিষয় নিয়ে অন্যত্র লিখেছেন। যেমন তখনকার সমকালীন রাজনীতি, সমাজতন্ত্রের ভাবনা, বাংলাদেশের কৃষি খাত, গ্রামীণ উন্নয়ন ইত্যাদি বিষয়। তবে এ গ্রন্থে নিজের মতামতকে চাপিয়ে দিয়ে নয়, বরং আর্থসামাজিক-রাজনৈতিক বিভিন্ন নির্বাচিত বিষয় নিয়ে তখনকার বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে চার অর্থনীতিবিদ কী ভেবেছেন, তাকেই লেখক প্রাধান্য দিয়েছেন।

সমসাময়িক পরিপ্রেক্ষিত এবং বিপরীতমুখী ও বিভিন্ন চাপ ও প্রবণতাকে বিবেচনায় নিয়ে একটি দ্বান্দ্বিক অনুসন্ধানী দৃষ্টি নিয়ে সে সময়ের ঘটনাপ্রবাহকে চার অর্থনীতিবিদের প্রেক্ষিত থেকে বুঝতে চেয়েছেন, বোঝাতে চেয়েছেন। হয়তো পরে এই চার অর্থনীতিবিদের চিন্তার জগতের একটি তুলনামূলক বিশ্লেষণ, কার্যকারণ ও পশ্চাৎ-দৃষ্টির সুবিধাজনক অবস্থানের আলোকে তার মূল্যায়ন আমরা নজরুল ইসলামের কাছে পাব, যা আমাদের আরও গভীরভাবে তখনকার সমসাময়িক ইস্যুকে (বিষয়) ভিন্নতর পরিপ্রেক্ষিত থেকে জানতে ও বুঝতে সাহায্য করবে। উৎসাহী পাঠকের জন্যও তা আগ্রহের বিষয় হবে বলে ধারণা করি। ভবিষ্যতে এসব বিষয়ে নিয়ে যাঁরা গবেষণায় আগ্রহী হবেন, তাঁদের জন্য নজরুল ইসলাম যে গবেষণাপদ্ধতি প্রয়োগ করেছেন, তা কাজে লাগবে বলে ধারণা করি।

ইতিহাসকে ভিন্নভাবে জানার সুযোগ
লেখক নজরুল ইসলাম এই বইয়ের মাধ্যমে একটি বড় কাজ করেছেন। বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্বে এ চার অর্থনীতিবিদের অবদানের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়ে তিনি নতুন প্রজন্মকে একটি সুযোগ করে দিলেন বাংলাদেশের ইতিহাসকে ভিন্নভাবে পড়ার ও জানার।

নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্ববোধ, দেশপ্রেম ও একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের যে স্বপ্ন এ চার অর্থনীতিবিদকে তাঁদের জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় উৎসর্গ করতে ব্রতী করেছিল, পরবর্তী প্রজন্ম তাঁর দ্বারা অনুপ্রাণিত হবে আশা করা যায়। আর তা যদি হয়, তাহলে নজরুল ইসলামের ‘ঋণ স্বীকার’ শুধু ঋণ স্বীকারেই সীমিত থাকবে না, চার অর্থনীতিবিদের প্রতি সেটাই হবে প্রকৃত শ্রদ্ধাঞ্জলি। গ্রন্থটি লেখার জন্য নজরুল ইসলাম ভালোবেসে যে শ্রম ও অভিনিবেশ দিয়েছেন, তার পেছনেও সম্ভবত এই প্রেরণাই কাজ করেছে।

মোস্তাফিজুর রহমান সম্মাননীয় ফেলো, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)

12/11/2023

প্রথমা বুক ক্যাফেতে যা পাবেন।

Photos from Prothoma Prokashan's post 11/11/2023

সিলেটে আপনাদের অপেক্ষায় প্রথমার নিজস্ব বিক্রয় কেন্দ্র বুক ক্যাফে। এখানে পেয়ে যাবেন দেশ-বিদেশের সকল বই। থাকছে উপন্যাস, গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ, গবেষণা, জীবনী, সাক্ষাৎকার, ধর্ম, শিশু-কিশোর এবং ইংরেজি বইয়ের বিশাল সমারোহ।

আরও থাকছে
প্রথমা প্রকাশনের বই, প্র প্রকাশনের বই, ভারতীয় বাংলা ও ইংরেজি বই, দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রকাশনীর বই।

প্রথমা বুক ক্যাফেতে আপনি সবান্ধব আমিন্ত্রত।

ইউনিমার্ট বিল্ডিং (নিচতলা)
শুভেচ্ছা ২, আম্বরখানা পয়েন্ট, আম্বরখানা, সিলেট ৩১০০
যে কোন প্রয়োজনে : ০১৯৫৫৫৫২০৬২, ০১৭০৮ ৭৩৫৫৭৯

10/11/2023

প্রথমা সিলেট উদ্বোধন অনুষ্ঠান শুরু হবে।

Photos from Prothoma Prokashan's post 10/11/2023

সিলেটে প্রথমা বুক ক্যাফে।
যখন প্রতিনিয়ত সৃজনশীল ও মননশীল বইয়ের দোকান কমছে, প্রথমা প্রকাশন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সেটাকে ধরে রাখার ও মানুষের কাছে ভালো দেশি-বিদেশি, বাংলা-ইংরেজিসহ রকমারি বই পৌছে দেওয়ার। সে ধারাবাহিকতায় আজ সিলেটে প্রথমার নতুন বিক্রয়কেন্দ্রের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন বিকেল ৪টায়। ইউনিমার্ট বিল্ডিং (নিচতলা), শুভেচ্ছা ২, আম্বরখানা পয়েন্ট, আম্বরখানা সিলেট।

চলে আসুন আপনিও।

10/11/2023

সিলেটে প্রথমা বুক ক্যাফে
আগামীকাল আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন। সবার আমন্ত্রণ।

Photos from Prothoma Prokashan's post 04/11/2023

প্রথমা প্রকাশনের নিজস্ব বিক্রয়কেন্দ্র এখন সিলেটে
ইউনিমার্ট বিল্ডিং (নিচতলা), শুভেচ্ছা ২, আম্বরখানা পয়েন্ট, আম্বরখানা, সিলেট ৩১০০।

সবার জন্য উন্মুক্ত থাকছে আজকে ৪-১১-২০২৩ থেকে

গল্প, কবিতা, উপন্যাস, প্রবন্ধ, গবেষণা, ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধ, জীবনী, সাক্ষাৎকার, ধর্ম, শিশু-কিশোরদের, আত্মোন্নয়ন, দেশি-বিদেশি বইয়ের বিশাল সমারোহ।

প্রথমা প্রকাশনের বই , প্র প্রকাশনের বই , দেশি বিভিন্ন প্রকাশনের বই, ভারতীয় বাংলা বই এবং বিদেশি বিভিন্ন প্রকাশনীর বই।

সবাইকে আমন্ত্রন প্রথমা প্রকাশনে

Want your business to be the top-listed Media Company in Dhaka?
Click here to claim your Sponsored Listing.

Videos (show all)

মির্জা গালিবের গজল - জাভেদ হুসেন #Sher#Shayeri#Gazal#Gajal#Mirza_Galib#Prothoma #Prothomalo#Javed_Hussen#JavedHussen
ইশক নে গালিব নিকম্মা কর দিয়াবরনা হাম ভি আদমি থে কাম কেমির্জা গালিবের গজলের ৭ম মুদ্রণ বাজারে উর্দু ও ফারসি থেকে ভাষান্তর:...
প্রথমা বুক ক্যাফেতে যা পাবেন।
১০০০ সালে পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গা থেকে কীভাবে হাজিরা হজ করতে যেতেন? কোন পথে?জানতে পড়তে হবে পুণ্যপথের যাত্রীরা: হজ হজযাত্রী...

Category

Address


19, Karwanbazar
Dhaka
1215

Opening Hours

Monday 10:00 - 18:00
Tuesday 10:00 - 18:00
Wednesday 10:00 - 18:00
Thursday 10:00 - 18:00
Saturday 10:00 - 18:00
Sunday 10:00 - 18:00

Other Publishers in Dhaka (show all)
BORSHADUPUR BORSHADUPUR
9, Banglabazar
Dhaka, 1100

বইয়ের বিকল্প শুধুই বই

এক রঙা এক ঘুড়ি প্রকাশনী এক রঙা এক ঘুড়ি প্রকাশনী
32/2 Shukrabad
Dhaka, 1207

এক রঙা এক ঘুড়ি প্রকাশনী'র অফিসিয়াল ফ্য

নিকোটিন-Dhowaツ নিকোটিন-Dhowaツ
Dhaka, 1204

পেজটি ভালো লাগলে অবস্যই পাশে থাকবেন।

Shikha Prokashoni Shikha Prokashoni
Banglabazer
Dhaka, 1100

A Trusted Publication Of Creative Books

𝓢𝓱𝓪𝓱𝓪𝓷𝓪𝓳 𝓐𝓯𝓻𝓾𝔃/彡 𝓢𝓱𝓪𝓱𝓪𝓷𝓪𝓳 𝓐𝓯𝓻𝓾𝔃/彡
Dhaka

পেজটি ফলো দিয়ে পাশে থাকবেন।।

Ronger Dhara Cadete Academy, Mymensingh Ronger Dhara Cadete Academy, Mymensingh
ময়মনসিংহ
Dhaka, 51526616

জ্ঞানের রাজ্যে তোমাকে স্বাগতম ❤️🇧🇩 জ্ঞান অর্জন কর,,, সেবা প্রদান কর,,,

𝑺𝒐𝒓𝒓𝒚 𝑺𝒐𝒓𝒓𝒚
Dhaka

シ︎㋛︎স্বার্থ❥︎শেষ, সম্পর্কও💔শেষ এটাই❥︎বাস্তবতা!

Lamp post Lamp post
Dhaka, 1206

all

B L O C K. B L O C K.
Bauphal.
Dhaka, ARFANAHMEDARIF

Arfan Ahmed Arif

Muslim UMMAH Muslim UMMAH
Dhaka

As Salamu'Alaikum!

সংহতি প্রকাশন-Samhati Publications সংহতি প্রকাশন-Samhati Publications
Room# 305, Rose View Plaza(2nd Floor), 185 Biruttam C. R. Dutta Road, Hatirpul
Dhaka, 1205

সংহতি প্রকাশন ২০০৭ সালে প্রতিষ্ঠিত।

Tanzeel Publications Tanzeel Publications
Dhaka
Dhaka, 1361

Tanzeel Publications is a name of new hope of exploration on the field of research-based publishing